শিংবিহীন ষাঁড়ের জাত উদ্ভাবন

By: রাশেদ শাওন ২০১৯-১০-০৯ ১০:২২:৩২ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১২:১২:০১ পিএম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
প্রতীকী ছবি

খুবই বিপজ্জনক ষাঁড়ের লম্বা শিং। শিংয়ের আঘাতে মানুষের যখম হওয়ার ঘটনা ঘটে প্রচুর। এমনকি এটি মৃত্যুরও কারণে হতে পারে। আবার ষাঁড় যদি অন্যান্য প্রাণীর ওপর ক্ষেপে তাহলেও রেহাই পাওয়া দুষ্কর। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ষাঁড়ের লম্বা শিং কেটে ফেলা-ই একমাত্র প্রতিকার। তবে শিং কাটা ষাঁড়ের জন্য বেশ যন্ত্রণাদায়ক।

এ সমস্যার সমাধান করতে বিজ্ঞানীরা ষাঁড়ের জিনের উপর গবেষণা চালিয়ে ডিএনএর এমন পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন, ফলে শিংওয়ালা ষাঁড়ের মাধ্যমে শিংবিহীন ষাঁড় উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা ষাঁড়ের শিং কেটে ফেলার বিকল্প পন্থা তৈরি করেছেন, ষাঁড়ের ডিএনএ-তে পরিবর্তনের মাধ্যমে শিং গজাবে না এমন ৬টি বাচ্চা প্রসব করানোর মধ্য দিয়ে এটি সম্ভবপর হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক একটি ষাঁড়ের জিন পরিবর্তন করেন এবং সেই ষাঁড়ের মাধ্যমে একটি গাভীর প্রজনন করান। এর পর তারা দুই বছর যাবত গাভীর বাচ্চাগুলোকে পর্যবেক্ষণে রাখার পর এ নতুন প্রজাতীর ষাঁড়ের উদ্ভাবন বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।

তারা এগুলোর শারীরিক বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদী ছিলেন। ন্যাচার বায়োটেকনোলজি জার্নালে তাদের গবেষণার বিস্তারিত ছাপা হয়েছে, যেখানে দেখা যায় ষাঁড়গুলোর শিং গজায়নি এবং সেগুলো সুস্থ রয়েছে।

মনে করা হচ্ছে, এই প্রযুক্তি ষাঁড়ের শিং কেটে ফেলার ব্যথাদায়ক রীতি কমিয়ে আনবে, যা কৃষকরা নিজেদের ও অন্যান্য প্রাণীর নিরাপত্তার স্বার্থে করে থাকে। জিন পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিকভাবেই শিংবিহীন ষাঁড় উৎপাদন করা যাবে, যার ফলে শিং কাটার ঝামেলা থেকে মুক্ত হবে খামারিরা।

৬টি বাচ্চা ষাঁড়ের মধ্যে দুটিতে সম্পূর্ণভাবে জিনের এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে এবং বাকি চারটির জিন সম্পূর্ণ পরিবর্তিত না হয়ে ব্যাকটেরিয়াল ডিএনএর ক্ষুদ্র অংশ বা প্লাসমিড রয়ে গেছে। গবেষণা প্রকল্পটির অন্যতম গবেষক ড. ভ্যান এনেনাম বলেন, ‘প্লাসমিড পশুর কোনো ক্ষতি করে না। তবে এই একত্রীকরণ কৌশলগতভাবে জিন-পরিবর্তিত ষাঁড়কে জেনেটিক্যালি মডিফায়েড জীবে পরিণত করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দেখিয়েছি যে, শুধু জিনোম পরিবর্তনের মাধ্যমেই সুস্থ ও স্বাভাবিক শিংবিহীন ষাঁড় উৎপাদন করা সম্ভব।’

গবেষকরা ষাঁড়গুলোর মধ্যে অন্য কোনো ধরনের জিনগত পরিবর্তন লক্ষ্য করেননি এবং সবগুলো সুস্থ রয়েছে। গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: স্কাই নিউজ