- ● যেভাবে ‘টেসলা’য় কর্মরত বাংলাদেশের রাফা
- ● A Decade of Recitation Elegance: Bachonik Celebrates 10 Years of Artistic Brilliance
- ● বর্ণাঢ্য আয়োজনে বুয়েট নাইট অনুষ্ঠিত
- ● ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার’-এ ভূষিত বঙ্গবন্ধু
- ● শনিবারের কলমে হিমাদ্রী: মায়ের “শেখসাব”
- ● সুখী দেশের তালিকায় কানাডা ১৫তে, শীর্ষে ফিনল্যান্ড
- ● গিনেস বুকে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’
- ● দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দশ তরুণ নেতাদের তালিকায় মাশরাফি
- ● ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ ২০২১ পাচ্ছেন যারা
- ● প্রসংশায় ভাসছে জিয়া হাসানের সাথে ঘরোয়া’র স্বত্বাধিকারীর আলাপচারিতা
রম্যগল্প : সার্টিফায়েড গাধা
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে অবলা প্রাণী কে?
উত্তরে যে যা-ই বলুন না কেন, গাধার ব্যাপারে আশা করি সবাই একমত হবেন।
দ্বিমত পোষণ করছেন? তো, হয়ে যাক একটি ছোট্ট পরীক্ষা।
বলুন তো, কুকুর কীভাবে ডাকে? ঘেউ ঘেউ...।
বিড়াল? ম্যাও ম্যাও...।
গরু? হাম্বা...।
এবার বলুন, গাধা কীভাবে ডাকে?
কি, দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন? গাধার কণ্ঠ মনে করতে পারছেন না? তাহলেই বুঝুন, প্রাণীজগতের মধ্যে গাধাই সবচেয়ে অ-বলা।
আমরা, মানুষেরা পরস্পরকে নামের বাইরেও যে সম্বোধনগুলো করে থাকি, সেগুলোর মধ্যে জরিপ করা হলে ‘গাধা’ যে শীর্ষস্থান দখল করবে, সন্দেহ নেই।
প্রায় সব শিক্ষকেরই তো ‘গাধা পিটিয়ে মানুষ করার’ অভ্যেস রয়েছে। ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-পেশা-সম্পর্ক নির্বিশেষে ‘গাধা কোথাকার’ মন্তব্যটাও কিন্তু সুপারহিট।
গাধা নিয়ে বলতে বাধা নেই। তার পরও, গাধাদের বক্তব্যও তো শোনা উচিত।
দেখি, নিজেদের নিয়ে গাধারা কী বলে।
তিনটি গাধা রাস্তার ধারে বসে কাঁদছে। এক পথচারী প্রথম গাধাটিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিরে, কাঁদছিস কেন?’
‘আর বলবেন না, আমার মালিকটা খুব বদমাশ। সারাদিন শুধু কাজ করায় কিন্তু কিছু খেতে দেয় না।’
পথচারী এবার দ্বিতীয় গাধাটিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুই কেন কাঁদছিস?’
‘আর বলবেন না, আমার মালিকটাও খুব বদমাশ। সারাদিন শুধু কাজ করায় কিন্তু কিছু খেতে দেয় না।’
এবার তৃতীয় গাধাটিকে জিজ্ঞেস করলেন পথচারী, ‘আর তুই? তুই কাঁদছিস কেন?’
‘আর বলবেন না, আমার মালিকটা বদমাশের ওস্তাদ। সারাদিন শুধু খেতে দেয় কিন্তু কোনো কাজ করায় না।’
‘ভালোই তো, তার পরও কাঁদছিস কেন?’
‘কাঁদছি কনফিউশনে।’
গাধার কথা শুনে পথচারী অবাক, ‘কিসের কনফিউশন?’
‘না মানে, ভাবছি গাধাটা কে- আমি, না আমার মালিক!’
আসলেই, কে যে কখন কীভাবে গাধা হয় আর কে কাকে গাধা বানায় সেটা বোঝা মুশকিল।
অনেকদিন পর দুই বন্ধুর দেখা।
‘কিরে দোস্ত, কী করছিস ইদানিং?’
‘আমি? ইয়ে মানে... মানুষকে গাধা বানায়া টাকা কামাই। আর তুই?’
‘কী আর করুম। তোর মতো কিছু মানুষ আমারে গাধা বানায়।’
২.
কেউ অন্যকে গাধা বানিয়ে মজা পায় আবার কেউ গাধা উপাধি পেয়েও ভীষণ উল্লসিত হয়। সত্যিকারের গাধাদের মধ্যেও শখ-উল্লাস কাজ করে। দুটি গাধার শখ হলো শেক্সপিয়রের নাটকে অভিনয় করবে। করলও। গল্পের নাম- অ্যাস ইউ লাইক বেস্ট!
তো, নাটক মঞ্চস্থ শেষে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করা গাধা বলল, ‘ওফ্! ভীষণ মাথাব্যথা করছে।’
পাশেই ছিল ডাক্তার-গাধা। বলল, ‘একটা অ্যাস-পিরিন খেয়ে নে।’
অ্যাস-পিরিন খেয়ে সুস্থবোধ করল নায়ক-গাধা। রওনা দিল বাড়ির পথে। কিছুদূর যাওয়ার পর জনশূন্য এক জায়গায় এক মাতলের সঙ্গে দেখা।
গাধা বলল, ‘এ্যাই, তুই কে রে?’
‘আমি এই রাজ্যের রাজা।’ মাতাল বলল, ‘তুই কে?’
এদিক-ওদিক তাকিয়ে গাধাটি বলল, ‘আমি রেসের ঘোড়া!’
ঠিক। গাধা নয়, সবাই রেসের ঘোড়াই হতে চায়। এগিয়ে থাকতে চায় সবার আগে।
দুই বন্ধুর মধ্যে কথা হচ্ছিল। আমেরিকান বন্ধু বিদ্রƒপাত্মক কণ্ঠে বলল, ‘তোরা খুব অদ্ভূত জাতি। তোদের কেউ সাদা, কেউ কালো, কেউ বাদামী। ঠিক ঘোড়াদের মতো।’
উত্তরে বাংলাদেশি বন্ধু বলল, ‘ঠিকই বলেছিস। ঘোড়াদের গায়ের রং বিভিন্ন রকম হয় কিন্তু সব গাধার গায়ের রং এক!’
৩.
রহিম সাহেব তার ছেলেকে প্রায়ই আক্ষেপ করে বলেন, ‘তুই এতই গাধা যে, গাধাদের কোনো কম্পিটিশন হলে সেখানেও সেকেন্ড হবি।’
এ-কথা শুনতে শুনতে ছেলে পেরেশান। একদিন বেশ খুশি মনে বলল, ‘বাবা, পাড়ার চাক্কু সোহেল আমারে গাধার বাচ্চা কইছে।’
‘কি? চাক্কু সোহেল এই কথা কইল আর তুই কিছু না বলেই চলে আসলি। গাধা কোথাকার।’
‘না বাবা, কইছি তো।’
‘কী কইছস?’
‘কইছি আমি আর বাচ্চা নাই, বড় হইয়া গেছি!’
৪.
এক জীবনে একজন মানুষ কতবার যে গাধা উপাধি পায়, সেটার হিসাব রাখার জন্যও একজন হিসাবরক্ষক নিয়োগ দেওয়া যায়।
কথা সত্য। আমার বন্ধু সাইফুল। গান-পাগল। একটি মেয়েকে খুব পছন্দ করে। মনের কথা জানিয়ে মেয়েটিকে অনেকগুলো এসএমএস পাঠাল। ফিরতি এসএমএস আসে না। সর্বশেষ এসএমএসে সাইফুল লিখল, আচ্ছা, তুমি আমার একটা এসএমএসেরও উত্তর দাও না কেন? আমাকে তোমার কী মনে হয়?
ফিরতি এসএমএস এল।
‘সা-রে-গা-মা-পা-ধা-নি-সা’র ৩ আর ৬ নম্বর বর্ণ পাশাপাশি রাখলে যে শব্দ হয়, তোমাকে আমার তা-ই মনে হয়।
সাইফুল মিলিয়ে দেখল, শব্দটা হয় : গাধা!
৫.
সাইফুল একদিন ঘোড়া হাঁকিয়ে গুলিস্তানের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ একটা জটলা দেখে এগিয়ে গেল। দেখল, এক লোক মাত্র পাঁচশ টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট দিচ্ছে। সাইফুল নিজের ঘোড়াটার জন্য একটা সার্টিফিকেট নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো। কিছুদূর আসার পর মনে পড়ল, আরে, আমি তো নিজের জন্যও একটা সার্টিফিকেট নিয়ে নিতে পারি। এত সস্তায় সার্টিফিকেট তো আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সাইফুল ফিরে এল লোকটির কাছে। পকেট থেকে পাঁচশ টাকার নোট বের করে বলল, এই যে ভাই, আমাকেও একটি সার্টিফিকেট দিন তো।
লোকটি মুচকি হেসে বলল, ‘স্যরি, আমি শুধু ঘোড়াদেরই সার্টিফিকেট দেই, গাধাদের না।’