যে কারণে এতো গুরুত্বপূর্ণ ‘স্যার আনিসুজ্জামান’

By: সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ২০২০-০৫-১৬ ৩:৩৫:১০ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১২:২১:১০ পিএম মতামত
জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত আনিসুজ্জামান

‘ষাটের দশক থেকেই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন স্যার আনিসুজ্জামান। আমার বিবেচনায় এর প্রধান কারণ তিনটি।

প্রথমত, তিনি একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল ছিলেন। দার্শনিক আন্তোনিও গ্রামসি বলেছেন, যিনি জাতির নৈতিক ও সামাজিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য তৈরি থাকেন, যাকে আমরা পাবলিক পারসুয়েশন বলি, তিনি জনগণকে বুঝিয়ে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রামে নামা, সেই কাজটি করেন। এই একটা কঠিন দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। এরকম আমাদের দেশে হাতেগোনা কয়েকজন, যাদের আমরা পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল বলতে পারি। তিনি সেই ভূমিকাই পালন করে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই কাজগুলো করেছেন। জনমত সংগঠিত করছেন। যখনই আমাদের ক্রান্তিকাল এসেছে, তখনই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তিনি ওই জায়গাতে গিয়েছেন, গিয়ে প্রতিরোধ করেছেন। সাম্প্রদায়িক চিন্তার বিরোধী ছিলেন। বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। শিক্ষার্থীদের জন্য যতরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, তরুণরা তাদের সংগ্রামে সবসময় স্যারকে পেয়েছেন। সংস্কৃতির আন্দোলনে সবসময়ই একটা বড় নেতৃত্ব তার ছিল।

দ্বিতীয়ত, গবেষণা ও শিক্ষকতার ক্ষেত্রেও তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যেমন: আমরা বলি উত্তর উপনিবেশবাদের চিন্তা। একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ছিল, যেটি এখন আর নেই, আফ্রো-এশিয়ান রাইটার্স ইউনিয়ন। এটি আফ্রো-এশীয় লেখকদের একটি সংহতি আন্দোলন। এটা কমিউনিস্ট চিন্তা-ভাবনায় প্রভাবিত ছিল। রাশা এটার পেছনে ছিল। কিন্তু, এটা আসলে উপনিবেশবিরোধী একটা সংগ্রামে রূপ নিয়েছিল। তিনি এটার সঙ্গে ছিলেন। তো আমরা যাকে মনের উপনিবেশমুক্তি বলি, যে ডিকলোনাইজিং দ্য মাইন্ড, এই বিষয়টা উনার চিন্তা-ভাবনায় একেবারে গভীরভাবে প্রতীত ছিল।

তিনি চেষ্টা করেছেন নিজের ঐতিহ্যে ফিরে যেতে। তিনি মধ্যযুগ নিয়ে কাজ করেছেন। তারপরে কোম্পানি আমলে ব্রিটিশদের যে ফ্যাক্টরি করেসপন্ডেন্স, তার ভেতর দিয়ে ঔপনিবেশিক চিন্তা কীভাবে প্রকাশ পাচ্ছে, এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছেন। তাত্ত্বিক ও অ্যাকাডেমিক, এই একটা ফিল্ডে তিনি প্রচুর কাজ করছেন এবং তিনি একটা পথপ্রদর্শক হয়ে রয়ে গেছেন। যেখানেই গবেষণা হবে, যেখানেই আমরা আমাদের ঐতিহ্যে ফিরে যাবো, সেই জায়গাতেই স্যারকে আমরা পাবো।

তৃতীয় একটা বিষয় ছিল, সাংস্কৃতিক আন্দোলন বা সংস্কৃতির সঙ্গে তার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়া। রাজনৈতিক আন্দোলন তিনি করে গেছেন। কিন্তু, কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হননি। একাত্তরেও তিনি বাংলাদেশের পক্ষে বহির্বিশ্বে জনমত সৃষ্টিতে কাজ করেছেন।  একটা দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ। আরেকটা দৃষ্টিকোণ থেকে, এই যে তিনি আফ্রো-এশিয়ান লেখক ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন এবং উপনিবেশবিরোধী চিন্তাগুলো বিভিন্ন জায়গায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেখানে তিনি একজন চিন্তানায়ক।

আর সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তিনি যে কাজটা করেছেন, একেবারেই বৈপ্লবিক কাজ। যখন পাকিস্তান আমলে রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করার একটা পাঁয়তারা চলছিল, তখন তিনি রবীন্দ্রনাথের ওপর একটা বই বের করেছিলেন। যেটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কিন্তু, সাহসের সঙ্গে তিনি কাজটি করেছেন। এরকম যখনই সাংস্কৃতিক সংকট হয়েছে আমাদের, তিনি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন এবং পরিষ্কার বাঙালিয়ানার পক্ষে কথা বলেছেন। বাঙালি চিন্তা-চেতনা, একাত্তরের চেতনা, এগুলো তার মধ্যে ছিল। সে চেতনাকেই তিনি ধারণ করতেন। যেমন: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনে তিনি ছিলেন, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মঞ্চ ‘রুখে দাঁড়াও’র সঙ্গে তিনি ছিলেন, গণজাগরণ মঞ্চের পেছনে তো তার খুবই সমর্থন ছিল। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যেখানে যেখানেই সংকট হয়েছে, সেখানেই তিনি একজন নেতার ভূমিকায় ছিলেন।

এই তিনটার বাইরে আরেকটা বিষয় বলি। তার জীবনটাই একটা উদাহরণ। তিনি বিনয়ী মানুষ ছিলেন, মার্জিত আচরণ করতেন। তার কাছে সব শ্রেণির মানুষের সমান অধিকার ছিল। দেখেছি, তিনি আর্টস ভবনের দারোয়ানের সঙ্গে পিঠে হাত রেখে কথা বলছেন, আবার কিছুক্ষণ পরে হয়তো একজন সহকর্মীর পিঠে হাত রেখে কথা বলছেন। কারো সঙ্গে তিনি বাছবিচার করতেন না। এটি একটি অসাধারণ ব্যাপার। বিদেশে দেখেছি, এটা হয় যে একজন বড় পণ্ডিত, অসম্ভব বিনয়ীভাবে সবার সঙ্গে কথা বলছেন। সেটার অভাব আমাদের দেশে আছে। আমাদের এখানে কেউ বেশি বিখ্যাত হয়ে গেলে, সেলিব্রেটি স্ট্যাটাসে চলে গেলে মানুষকে খুব অবমূল্যায়নের মেজাজ তৈরি হয়। কিন্তু, স্যার সেটা কখনো করতেন না। সবার কাছে সমভাবে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। আমার যেটা ভালো লাগতো, স্যারের সামনে গেলেই কমফোর্ট জোনটা তিনি তৈরি করে দিতেন। ফলে স্যারের সঙ্গে আর দূরত্ব থাকতো না।

তার মধ্যে একটা অসম্ভব রসবোধ ছিল। এই ধরনের মানুষ আমাদের দরকার। যারা আমাদের সামনে বসে কথাগুলো বলবেন এবং আমরা শুনবো। এমনও হয়েছে, তিনি সভাপতির আসনে বসে দুই ঘণ্টা ধরে বক্তৃতা শুনলেন। বিরক্ত হচ্ছেন, কিন্তু কোনো রকমের বিরক্তি প্রকাশ করছেন না। কিন্তু, যখন নিজে কথা বলছেন, তিন-চার মিনিটে শেষ করে দিলেন। এই যে এত শুদ্ধ করে বাংলা বলা, সুন্দরভাবে যেকোনো বিষয়কে উপস্থাপন করা, তার মধ্যে একটা রসবোধ তৈরি করা, এটা কিন্তু বাঙালির চিরন্তন একটা গুণ ছিল, যেটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আমরা তো ভাষা শেষ করে ফেলেছি। এখন ক্রমাগত বাংলা বলার মতো মানুষই নাই। “আসলে কিন্তু.. আসলে কিন্তু..” করতে করতে আমাদের সরাসরি প্রতিবেদন হয় না। টেলিভিশনে দেখলেই মনে হয় বাংলা বলাটা পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন। মানে মহামারি মোকাবিলার চেয়েও বাংলা বলাটা এখন কঠিন। স্যারের সামনে কোনোদিন বসলে আমার মনে হতো না এই বিষয়টাকে তিনি কখনো কোনো পর্যায়ে জটিল করছেন। সহজ, সুন্দর করে কথা বলছেন। তাত্ত্বিক কথা বলছেন তাত্ত্বিক মর্যাদায়। আবার যখন শ্রেণিকক্ষে কথা বলছেন, খুব সহজে বোঝাবার চেষ্টা করছেন। এই যে কমিউনিকেশন, যেটাকে আমরা যোগাযোগ বলি, এটা একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালের বড় সম্পদ। যে মানুষ তাকে বুঝতে পারছে কি না। এর কোনো অভাব তার ভেতরে আমি দেখিনি।

আর এই সময়ে তার বেশি প্রয়োজন ছিল। কারণ, আমার ধারণা, মহামারি-উত্তর বাংলাদেশে দুই রকমের পরিস্থিতি হতে পারে। এর যেকোনো একটি আমরা দেখতে পাবো। পৃথিবীর ক্ষেত্রেও এমনটি বলা যায়। আমেরিকাতে বলুন বা ইতালিই বলুন। পশ্চিমে আমি যেটা বলছি, শ্বাপদ সংকুল একটা বিশ্ব। কোভিড-১৯ এর সুযোগে ইউরোপে ন্যাশনালিজম (জাতীয়তাবাদ) মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, এথনিক মাইনরিটির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। তো এই পৃথিবীটা হবে অন্য কোনো মানুষের জন্য নিরাপদ না। শুধু একটা শ্রেণির মানুষ তার নিজের দেশের ন্যাশনালিজম চর্চা করে বেঁচে থাকবে। ভারতে হিন্দুত্ববাদী যারা করেন, তারাই বাঁচবেন; পাকিস্তানে যারা ইসলামী শাসনে বিশ্বাস করেন, তারাই বাঁচবেন; চেক রিপাবলিকে যারা রাইটিস্ট, তারা বাঁচবেন; এই ধরনের অবস্থা তৈরি হবে। আমেরিকাতেও হোয়াইট সুপ্রিমিস্টরা জায়গা নিয়ে নেবে। আমার ধারণা, এটা এক ধরনের পরিস্থিতি বা অবস্থা।

আরেকটা অবস্থা, যেটা মহামারিই সবাইকে সংক্রমিত করে দেখিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মালি পর্যন্ত, ব্রিটেনে একই দিনে প্রধানমন্ত্রী ও মালি আক্রান্ত হয়েছেন, অর্থাৎ কাউকে তো বাছবিচার করছে না সে (মহামারি)। এই একটা সময়ে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে। কিন্তু, একসঙ্গে আবার থাকাও যাচ্ছে না। মার্চের শুরুর দিকে স্যারের সঙ্গে শেষ যখন কথা হলো, তখন এই প্রসঙ্গটা এসেছিল। স্যারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই যে সবকিছু আমাদের সংস্কৃতির একদম বিরুদ্ধে যাচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে— সবাই মিলে একসঙ্গে থাকুন। পহেলা বৈশাখে হাত ধরাধরি করে নেমে পড়া। আমরা উদযাপনে বিশ্বাস করি। হাত ধরাধরি করে প্রত্যেকটা দিন আমরা প্রাণে প্রাণ মিলিয়ে চলি এবং ঈদে কোলাকুলি একেবারে অপরিহার্য ব্যাপার। কিন্তু, এইটা (করোনা) এসে এমন একটা সংস্কৃতি সৃষ্টি করলো, যেখানে দূরত্ব হচ্ছে বেঁচে থাকার অবলম্বন। একাত্তরে আমরা একসঙ্গে ছিলাম বলে বেঁচে গেলাম। কিন্তু, এখন আমরা দূরত্বে থাকলে বাঁচবো, এটা কেমন সংস্কৃতি! এটাতো আমাদের সংস্কৃতির মূলে আঘাত হানছে। স্যার বললেন, “আমাদের সংস্কৃতির চিন্তাটা গ্রহণ করলে সেখান থেকেও আমরা বাঁচতে পারবো। কারণ, এটাতো (মহামারি) চিরস্থায়ী না।” তিনি আমাদের একটি বিরহের গানের উদাহরণ দিলেন। গানটির শুরুটা এমন— “বৈশাখ আইলো, জ্যৈষ্ঠ আইলো, কিন্তু আমার স্বামী তো আইলো না।” গানের শেষে আছে যে, একদিন আমার স্বামী আমার কাছে আসবে, আমার দ্বৈত আমার কাছে আসবে ফেরত। “তো আমাদের যেটা করতে হবে, অবস্থাটা মেনে নিতে হবে। দূরত্বটা বজায় রেখে আমাদের নিজস্ব একটা চর্চার ভেতর ঢুকতে হবে। ভালোই তো, কিছুদিন মানুষ নিজেকে নিয়ে থাকলে তার অপূর্ণতাগুলো সে বুঝতে পারবে”— এভাবেই বলেছিলেন স্যার।

কিন্তু, আমরা তো তা করছি না। আমরা আলাদা থাকছি, কিন্তু আমাদের নিজের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন তাই নিশ্চিত করছি। তার মানে সামনের পৃথিবীটা যেটা সম্ভাবনা ছিল যে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকবো, একজন আরেকজনের দেখাশোনা করবো, এটাই তো মহামারি আমাদের বলছিল। যারা আমাদের সম্মুখযোদ্ধা, পুলিশরা, নার্সরা, স্বাস্থ্যকর্মী, যারা জরুরি সেবা দিচ্ছেন, তারাই তো আমাদের হয়ে যুদ্ধটা করছেন। কিন্তু, তাদেরকেই তো আমরা সমর্থন দিচ্ছি না। সমাজ দিচ্ছে না, রাষ্ট্র দিচ্ছে না। ফলে এখানেই তো বৈষম্য তৈরি হয়ে যাচ্ছে। তারপরে এই যে আমাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে, সেখানে একটা বৈষম্য। মানে আমি যেদিকে তাকাই সেদিকে এই বৈষম্যটা দেখতে পাই। যেমন: গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিকরা মুনাফার জন্য উদগ্রীব হয়ে গেছে। সবাইকে বলছি না, যারা টাকার লোভী তাদের বলছি, তাদের (গার্মেন্টস মালিকদের) গ্যারেজে ১০-১২ কোটি টাকার গাড়ি তো পড়ে থাকে। তারাও এত অস্থির হয়ে গেল কেনো? ওই যে বললাম, ডারউইনিয়ান থিউরিটা চলে আসবে, শ্বাপদ সংকুল বিশ্ব। এটাই বোধহয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। স্যারকে এইখানে একটা নেতৃত্বের জায়গায় আমাদের প্রয়োজন ছিল। কারণ তাকে রাষ্ট্র সম্মান করতো, জনগণ সম্মান করতো।

শেষ কথাটা বলি, স্যার চলে গেছেন, কিন্তু, তার শিক্ষাটা তো আমাদের কাছে আছে। আমি যতখানি পারবো, স্যারের কথাগুলো আমার তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেবো। আমার মনে হয়, স্যারের শিক্ষার্থী যারা ছিলেন, যারা বিভিন্ন অবস্থানে আছেন, কেউ শিক্ষক, বিভিন্ন পেশাজীবী, কেউ সাংবাদিক, সবাইকে স্যারের কথাগুলো পৌঁছে দিতে হবে। স্যারের কথাগুলো খুব জটিল কিছু না। দুই রকমের কথা তিনি বলেছেন। তাত্ত্বিক ও অ্যাকাডেমিক, যেটা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই বুঝবেন। এটা সবার জন্য নয়।

আর যেটা তিনি সবাইকে বলেছেন, এই যে সংস্কৃতির বিষয়গুলো, এই যে আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে বাঙালিয়ানার প্রকাশ ঘটানো, অসাম্প্রদায়িক, প্রাগ্রসর চিন্তা, সবাইকে নিয়ে থাকা, বৈষম্য কমানো— এই কথাগুলোই স্যার বারবার বলেছেন। প্রসন্ন মেজাজ ধরে রাখা, রসবোধ থাকা সবসময়, কারো সঙ্গে রাগ করার কোনো প্রয়োজন নেই, ঠাট্টার ছলে আমি অনেক মানুষকে অনেক কড়া কথা বলতে পারি। তাকে কষ্ট না দিয়েও কথাগুলো যদি তাকে বলা যায়। এই যে আমাদের সংস্কৃতির ভেতরের শক্তিগুলো স্যার আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন, শনাক্ত করেছেন, এটা যদি আমরা অনুসরণ করতে পারি, তাহলে কিন্তু স্যারের অভাবটা অনেকটাই পূরণ করা যাবে। এই কারণগুলোর জন্যই তাকে আমাদের এত প্রয়োজন ছিল এবং ভবিষ্যতেও তাকে প্রয়োজন হবে।’

 

 

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম (শিক্ষাবিদ ও লেখক)

সূত্র: ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)