‘সাদা’ খাতা জমা দিয়েও সর্বোচ্চ নম্বর

By: রাশেদ শাওন ২০১৯-১০-১১ ৮:৫২:৫৯ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ৯:৫৭:৫৮ পিএম আন্তর্জাতিক
ইমি হাগা

শ্রেণিকক্ষে রচনা লিখতে দিয়েছিলেন শিক্ষক। তবে ১৯ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী জমা দেন ‘সাদা’ খাতা। এমন উত্তরপত্রের রহস্য উন্মোচন করে মুগ্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থীকে দেন সর্বোচ্চ নম্বর।

‘সাদা’ খাতা জমা দেওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম ইমি হাগা। তিনি জাপানের মিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

তিনি পড়ছেন জাপানের ‘নিনজা ইতিহাস’ বিষয়ে। মধ্যযুগে জাপানে গুপ্তচরবৃত্তি নিনজা নামে পরিচিত।

সম্প্রতি নিনজা ইতিহাসের এক ক্লাসে অধ্যাপক ইউজি ইয়ামাদা শিক্ষার্থীদের রচনা লিখতে দেবেন বলে জানান। সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেন, রচনা লেখার দক্ষতার পাশাপাশি তিনি সৃজনশীলতাকেও গুরুত্ব দেবেন। রচনার বিষয়বস্তু ছিল মিয়ে অঞ্চলের ইগা শহরে অবস্থিত ইগারিউ নিনজা জাদুঘরে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। অনেক ভেবে ইমি ‘আবুরিদাশা’ নামে এক নিনজা কৌশল অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেন। এই কৌশলে সয়াবিন ভিজিয়ে চূর্ণ করার পর তা দিয়ে অদৃশ্য কালি তৈরি করা হয়। গোপন বার্তা পাঠাতে জাপানে একসময় এই কৌশল ব্যবহার করা হতো।

ইমি জানান, ছোটবেলায় তিনি আবুরিদাশা কৌশলের বিষয়ে একটি বইয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক যখন ক্লাসে এসে বললেন যে সৃজনশীলতার জন্য তিনি রচনা লেখায় সর্বোচ্চ নম্বর দেবেন, সে সময়ই আমি সিদ্ধান্ত নিই যে অন্যদের চেয়ে আলাদাভাবে রচনা লিখব।’

অদৃশ্য কালি তৈরির জন্য ইমি রাতভর সয়াবিন ভিজিয়ে রাখেন। এরপর তা চূর্ণ করে একটি কাপড়ে রেখে রস সংগ্রহ করেন। সেই রসের সঙ্গে পানি মিশিয়ে আরও দুই ঘণ্টা ব্যয় করেন ঘন করতে। শ্রেণিকক্ষে ‘ওয়াশি’র (জাপানে ব্যবহার হওয়া পাতলা কাগজ) ওপর একটি সূক্ষ্ম ব্রাশ দিয়ে রচনা লেখেন। শুকিয়ে যাওয়ার পর খাতায় দৃশ্যমান কোনো লেখা ছিল না। শিক্ষক যেন ‘সাদা’ ভেবে খাতাটি ফেলে না দেন সে জন্য তিনি সাধারণ কালিতে খাতার এক কোণে ছোট্ট করে লিখে দেন, ‘তাপ দিন।’

অধ্যাপক ইউজি ইয়ামাদা বলেন, তিনি খাতায় থাকা নির্দেশনা অনুসরণ করে তাঁর বাসায় গ্যাস স্টোভে খাতাটিতে তাপ দেন। এরপরই ফাঁকা খাতাটি ভরে ওঠে শব্দে–বাক্যে। তিনি বলেন, ‘এমন সৃজনশীলতা দেখে ওই শিক্ষার্থীকে পূর্ণ নম্বর দিতে আমি বিন্দুমাত্র দ্বিধা করিনি।’