পরিবর্তন হল বাংলা ক্যালেন্ডারের

By: রাশেদ শাওন ২০১৯-১০-১৯ ৬:০০:৫৮ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১১:১৫:২৬ এএম বাংলাদেশ
ছবি: প্রতীকী

বাংলাদেশে নতুন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী এখন থেকে বাংলা বছরের প্রথম ছয় মাস ৩১ দিনে হবে। এর আগে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র---বছরের প্রথম এই পাঁচ মাস ৩১ দিন গণনা করা হত। এখন ফাল্গুন মাস ছাড়া অন্য পাঁচ মাস ৩০ দিনে পালন করা হবে। ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের, কেবল লিপইয়ারের বছর ফাল্গুন ৩০ দিনের মাস হবে।

বাংলা বর্ষপঞ্জি পরিবর্তনের কাজটি করেছে বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ।

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দিবসগুলোকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে সমন্বয় করতে ‘বাংলা ক্যালেন্ডার’  এ পরিবর্তন করা হয়েছে।

বাংলা একাডেমি থেকে বলা হয়েছে, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ১৬ই ডিসেম্বর, ২৬শে মার্চের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস সমূহ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দিনে পালন করা হবে।

যেমন ২১শে ফেব্রুয়ারি, যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়, ১৯৫২ সালে ভাষার দাবিতে নামা মিছিলে গুলি চালানোর সেই ঘটনা ঘটেছিল বাংলা আটই ফাল্গুনে।

কিন্তু বছর ঘুরে অধিকাংশ সময়ই এখন ২১শে ফেব্রুয়ারি গিয়ে পড়ে নয়ই ফাল্গুনে, যা নিয়ে বিভিন্ন সময় লেখক, কবি, সাহিত্যিকসহ অনেকে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

একইভাবে বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের ঐ দিনটি ছিল পয়লা পৌষ, কিন্তু বাংলা পঞ্জিকায় দিনটি পড়ত দোসরা পৌষ।

আবার রবীন্দ্রজয়ন্তী ও নজরুলজয়ন্তী এবং তাঁদের মৃত্যুদিনও বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী যে দিনে হয়েছিল, তার সঙ্গে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির দিন মেলে না। কিন্তু নতুন নিয়মে দুই বর্ষপঞ্জির মধ্যে দিন গণনার সমন্বয় করা হয়েছে।

বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ থেকে আরো জানানো হয়েছে, এই পরিবর্তন মূলত চলতি ১৪২৬ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন থেকে চালু হয়েছে।

কিন্তু আগের নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু প্রথম পাঁচ মাস ৩১ দিনেই হয়ে থাকে, সে কারণে আশ্বিন মাস পর্যন্ত পরিবর্তন টের পাওয়া যায়নি।

নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মঙ্গলবার প্রথমবারের মত ৩১ দিনের আশ্বিন মাস পালন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর পয়লা কার্তিক গণনা শুরু হওয়ায়, আজই নতুন ক্যালেন্ডারের পরিবর্তন প্রথম দেখা যায়।

বাংলাদেশে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বর্ষপঞ্জি সংস্কার করা হলো।

নতুন করে পরিবর্তন আনার জন্য ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি সংস্থাটির তৎকালীন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে।

সেই কমিটিতে ড. অজয় রায়, জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা