আফিফ ঝড়ে জয়ে শুরু বাংলাদেশের

By: রাশেদ শাওন ২০১৯-০৯-১৩ ৯:৪২:০৬ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১২:০৩:১৪ পিএম ক্রিকেট
তরুণ ক্রিকেটার আফিফ হোসাইন

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে  ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার বৃষ্টিতে দেড় ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচ নেমে আসে ১৮ ওভারে। জিম্বাবুয়ের ১৪৪ রান তাড়ায় বাংলাদেশ জিতেছে ২ বল বাকি থাকতে।

নামিদামি খেলোয়াড় যেখানে আসাযাওয়ার মিছিল করেছেন সেখানে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে সপ্তম উইকেট জুটির মোসাদ্দেক ও আফিফ। তারা দুজনে মিলে ৪৭ বলে তুলেছেন ৮২ রান। ২ ছক্কায় ২৪ বলে ৩০ করে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক। আর বাংলাদেশের এ জয়ের নায়ক আফিফ করেছেন ২৬ বলে ৫২ রান।

মাঝারি রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভালো ছিল না। ইনিংসের প্রথম ওভারেই শন উইলিয়ামসনকে ছক্কায় হাকান লিটন দাস। পরের ওভারে দারুণ শটে বাউন্ডারিতে পাঠান কাইল জার্ভিসকে।

এরপরই জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে লিটন বোল্ড হন টেন্ডাই চাতারার বলে।

ওপেনিংয়ে লিটনের সঙ্গী সৌম্য সরকারও ফেরেন বাজে শট খেলে জার্ভিসের বলে।

জার্ভিসের সেই ওভারেই আরেকটি বড় ধাক্কা। টেকনিকে দেশের সেরাদের একজন বলে বিবেচিত মুশফিকুর রহিম প্রথম বলেই বাউন্সারে ফেরেন। পরের ওভারেও চাতারাকে উইকেট দিয়ে আসেন সাকিব। বাংলাদেশের রান তখন ৪ উইকেটে ২৯।

মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান চেষ্টা করেন জুটি গড়ার। কিন্তু পারেননি বেশিদূর এগোতে। ১৪ রান করা মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে ২৭ রানের জুটি ভাঙেন বার্ল।

পরের ওভারেই আবার দৃশ্যপটে বার্ল। নেভিল মাদজিভার বলে উড়িয়ে মেরেছিলেন সাব্বির। রাতের আকাশে বল প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল যেন। মিড উইকেটে অনেকটা ছুটে সামনে ডাইভ দিয়ে সেই বলই অসাধারণ দক্ষতায় হাতে নেন জমালেন বার্ল। বাংলাদেশ তখন ৬ উইকেটে ৬০। 

আফিফ গিয়েই পাল্টে দিলেন চিত্র। প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাকান। পরের ওভারেও শন উইলিয়ামসকে মারেন দুই চার, এক ছক্কা।

মোসাদ্দেকেও তাল মিলিয়েছেন আফিফের সাথে। টানা দুই বলে দুর্দান্ত দুটি ছক্কায় হাকান বার্লকে।

এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৮ চার ও ১ ছক্কার ইনিংস খেলে আফিফ আউট হয়েছেন শেষ ওভারে।

ম্যাচের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের একটি রেকর্ড দিয়ে। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই নেন উইকেট, ব্রেন্ডন টেইলর ফিরে যান দ্বিতীয় ওভারেই।

হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ক্রেইগ আরভিনের ব্যাটে সেই ধাক্কা সামাল দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। তবে দুজনর কেউই লম্বা করতে পারেননি ইনিংস।

২৬ বলে ৩৪ করে মাসাকাদজা ফেরেন সাইফ উদ্দিনের বলে। মুস্তাফিজুর রহমান তার আগেই ফেরান আরভিনকে।

মিডল অর্ডারে শন উইলিয়ামস ও টিমিসেন মারুমা পারেননি টিকতে। দশম ওভারে ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে তখন কাঁপছে।

বার্ল ও মাতমবোদজি সেখান থেকে জুটি বেঁধে এগিয়ে নেন দলকে। শুরুতে কয়েক ওভার সাবধানে খেলেছেন দুজন। এরপর দুর্দান্ত সব শটে চমকে দেন বার্ল। পরপর দুই বলে চার ও ছক্কা মারেন মুস্তাফিজকে। তিনটি করে চার ও ছক্কায় সাকিবের এক ওভারে নেন ৩০ রান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের সবচেয়ে খরুচে ওভার এটিই।

এই জুটিকে আর আলাদা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৩২ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন বার্ল। ২৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত মাদজিভা। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটিতে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৮১ রান আসে কেবল ৫১ বলে।

তবে শেষ পর্যন্ত আফিফের কাছে আড়াল হয়ে গেছে অন্য সবাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে : ১৮ ওভারে ১৪৪/৫ (টেইলর ৬, মাসাকাদজা ৩৪, আরভিন ১১, উইলিয়ামস ২, মারুমা ১, বার্ল ৫৭*, মাতমবোদজি ২৭*;  সাকিব ৪-০-৪৯-০, তাইজুল ৩-০-২৬-১, সাইফ ৪-০-২৬-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৩১-১, মোসাদ্দেক ৩-০-১০-১)।

বাংলাদেশ: ১৭.৪ ওভারে ১৪৮/৭ (লিটন ১৯, সৌম্য ৭, সাকিব ১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ১৪, সাব্বির ১৫, মোসাদ্দেক ৩০*, আফিফ ৫২, সাইফ ৬*; উইলিয়ামস ৩-০-৩১-০, জার্ভিস ৪-০-৩১-২, চাতারা ৪-০-৩২-২, বার্ল ৩-০-২৭-১, মাদজিভা ৩.৪-০-২৫-২)।

ফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আফিফ হোসেন