- ● যেভাবে ‘টেসলা’য় কর্মরত বাংলাদেশের রাফা
- ● A Decade of Recitation Elegance: Bachonik Celebrates 10 Years of Artistic Brilliance
- ● বর্ণাঢ্য আয়োজনে বুয়েট নাইট অনুষ্ঠিত
- ● ‘গান্ধী শান্তি পুরস্কার’-এ ভূষিত বঙ্গবন্ধু
- ● শনিবারের কলমে হিমাদ্রী: মায়ের “শেখসাব”
- ● সুখী দেশের তালিকায় কানাডা ১৫তে, শীর্ষে ফিনল্যান্ড
- ● গিনেস বুকে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’
- ● দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দশ তরুণ নেতাদের তালিকায় মাশরাফি
- ● ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ ২০২১ পাচ্ছেন যারা
- ● প্রসংশায় ভাসছে জিয়া হাসানের সাথে ঘরোয়া’র স্বত্বাধিকারীর আলাপচারিতা
“প্রবাসীদের লাশ সরকারী খরচে দেশে আনার আইন হোক”
‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। এর আগেও গণমাধ্যমে ও জনসম্মুখে ‘খোলামেলা’ মন্তব্য করে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। এবারও প্রবাসীদের নিয়ে সমালোচনাকারিদের এক হাত দেখিয়ে দিলেন। বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তার ফেভিফাইড পেজে ৬ জুন তিনি ‘তথাকথিত সমালোচক’দের মন্তব্য প্রসঙ্গে নিজর মতামত দিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হয়েছেন।
ফেসবুকে সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, সমালোচনাকারীরা আদতে ভীতু। তাই তারা প্রতিবাদ করেন বুঝেশুনে।
প্রবাসীদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপকারীদের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি সরকারকে অনুরোধ করে বলেন, ‘প্রবাসীদের লাশ সরকারী খরচে দেশে আনার আইন হোক’। এছাড়া তিনি প্রবাসীদের সম্মান জানান।
তাঁর দেওয়া স্ট্যাটাসটির গুরুত্ব বিবেচনায়, এই প্রতিবেদনে তা হুবহু তুলে ধরা হল নীচে।
ভারতের কেরালায় বন্য শুকরের জন্য পাতা ফাঁদে দূর্ঘটনাবশত একটা অন্ত:স্বত্তা হাতি মারা গেছে। মানুষ যে অমানুষ এটা জন্মের পর থেকেই শুনে আসছি।স্রষ্টার যে কোন সৃষ্টির প্রতি অবিচারে আমারও মন কাঁদে। এই অবুঝ হাতি মৃত্যুর ঘটনায় পশুপ্রেমিকদের ক্রন্দনে আকাশ বাতাসের সঙ্গে ফেসবুকও ভিজে গেছে। এদিকে কয়দিন আগে পঞ্চগড় সীমান্ত শিমোন রায় নামে একজন স্কুলছাত্রকে বিএসএফ পেটে বন্দুক চেপে গুলি ছুড়ে ভুড়ি বের করে মেরে ফেলেছে, সেটা নিয়ে তাদের কোন বিকার দেখলাম না। লিবিয়ায় ছাব্বিশজন নিরীহ প্রবাসীকে হত্যা করা হলো এটা নিয়েও তাদের বিবেক আটক ছিল খোঁয়াড়ে।দেশে মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে, সেটা নিয়েও প্রতিক্রিয়া দেখলাম না। আজকাল ভীতুদের প্রতিবাদও হয় বুঝে শুনে যেখানে সেফটি আছে।
মনে বহু কষ্ট নিয়েই প্রবাসে যেতে হয়, আর উচ্চতর ক্যারিয়ার গড়ার জন্যও বিদেশ যায় মানুষ।৯১ সালে গলাকাটা পাসপোর্টে জার্মানী যেতে চেয়েছিলাম প্রতিষ্ঠিত হতে যেন মিতুকে বিয়ে করতে পারি, পরে যাওয়া হয়নি।২০০২ সালে কাতার গেলাম শো’তে।আমাদের বংশের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর ভাইয়া আর উনার ছোটজন হানিফ ভাইয়া তখন কাতার প্রবাসী।কাতার এখনকার অবস্থায় ছিলোনা।এয়ারপোর্ট ছিল একদম ছোট।উনারা কনষ্ট্রাকশন ফার্মে কাজ করতেন ৪৫/৫০ ডিগ্রী তাপমাত্রায়।আমাদের প্রবাসীরা অনেকে এখনো এসব অমানবিক কষ্টের কাজ করছেন।আগে প্রবাসীদের টিপ্পনি কেটে বলা হত ওসি ডিসি অর্থ্যাৎ ওনিয়ন কাটার এবং ডিশ ক্লিনার। এবারের করোনা পুরো জাতিকে ওসি ডিসি বানিয়ে দিয়েছে।প্রবাসী মানে লেবার মনে করে স্বদেশীরা, তাতে কোন সমস্যা নাই। তবে আমরা ভুলে যাই প্রবাসে আমাদের কোয়ালিফাইড ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার সাইন্টিস্ট অধ্যাপক সাংবাদিক রাজনীতিকসহ অন্যান্য সম্মানী পেশার মানুষও আছেন।এক প্রবাসী ইটালী থেকে নেমে কোয়ারেন্টাইনে গিয়ে দেখে গুদামঘরের মত জায়গায় নিয়ে সেখানে তাদের থাকতে বলছে।এগারো ঘন্টা জার্নিসহ নানান বিড়ম্বনায় তিনি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে সিনক্রিয়েট করে জাতির কাছে ভিলেন হয়েছেন। তুচ্ছতাচ্ছিল্যতে অভ্যস্ত জাতি পুরো প্রবাসীদের গালাগাল শুরু করলো। ভুলেই গেল অর্থনীতিতে তাদের অবদান।
করোনায় স্থবির অর্থনীতিতে জাতি যখন শুধু হাত ধোয় আর প্রনোদনা ভিক্ষা করে তখন প্রবাসী “নবাব ”আর “চোরডাকাতরা ”রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১৬৪২ কোটি ডলার (১৬.৪২ বিলিয়ন ডলার)। অর্থবছর শেষ হওয়ার একমাস আগেই এ টাকা পাঠিয়ে গতবছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে, যা মোট জিডিপির ১২%।ছোটবেলায় পড়েছিলাম নেই কাজ তো খই ভাজ। বেকুব নাতি গোলার সব ধান দিয়ে খই ভেজে ফেলেছে, এবার ভাত খাওয়ার চাল নাই। ক্রমাগত ট্রল আর ছোট করার মানসিকতা সম্পন্ন জাতির প্রধান কাজই হচ্ছে প্রবাসীদের নিয়ে জাবর কাটা। অথচ প্রত্যেকটা পরিবারে কোন না কেনো ভাবে প্রবাসী আছেই। আফসোস আমরা সম্মান করাটা শিখলামই না। এখন দাবী প্রবাসীদের লাশ সরকারী খরচে দেশে আনার আইন হোক, তাদের জন্য প্রিভিলেজড কার্ডের ব্যবস্থা করা হউক। করোনা শিখিয়েছে বাস্তবতা; কে আপন, কে পর। আসেন আমরা সমালোচকরা সবাই সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে সরকারের কাছে ভিক্ষা চাই। প্রবাসীদের জন্য আরো একটি গান তৈরী করবো দ্রুত।
স্যালুট প্রবাসী ভাইবোনেরা...
ভালবাসা অবিরাম...