কেউ ঝুঁকি নিবেন না: আফরোজা বেগম

By: রাশেদ শাওন ২০২০-০৫-২৩ ১০:৪৬:৫৬ পিএম আপডেট: ২০২৪-১১-২১ ১:২৩:৫০ এএম সাক্ষাতকার
আফরোজা বেগম

একজন ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার আফরোজা বেগম। টরোন্টো ঢাকা ক্লাবের একজন সদস্য তিনি। স্থানীয় নানা সামাজিক ও সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত। তাঁর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে সুখবর। চলুন জেনে নিই কিভাবে এই ঈদ উদযাপন করছেন তিনি, তাঁর চুম্বকাংশ। 

 

সুখবর: কেমন আছেন? কি করছেন আপনি?

আফরোজা: বাসাতেই আছি। আজ আমার সাপ্তাহিক ছুটি। টানা পাঁচ দিন কাজের পর আজকে অনেকটা ঢিলেঢালা দিন কাটাচ্ছি। ঘরদোড় গোছগাছ করছি। কালতো ঈদ। ঈদের রান্নাবান্নারও প্রস্তুতি নিচ্ছি ধীরে ধীরে। 

 

সুখবর: ঠিকই তো, আজ বাদে কাল ঈদ। সে হিসেবে আজকের সন্ধ্যাকে বলা হয় ‘চাঁদ রাত’। এ বছর টরোন্টোর ডানফোর্থে এর কোনো আয়োজন নেই। একটু কি খারাপ লাগছে?

আফরোজা: হুম, খারাপ একটু লাগছে। গত বছরওতো ড্যানফোর্থের ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের পাশে টরো্ন্টো ঢাকা ক্লাব ‘মেহেদী উৎসব’র আয়োজন করে। আয়োজক টরোন্টো ঢাকা ক্লাবের একজন সদস্য হিসেবে গত বছরও ‘চাঁদ রাত’ উদযাপন করেছি। কত মানুষের ভিড় ছিল। মেলার মতো মনে হচ্ছিল। সন্ধ্যার পর তো পুরো এলাকাটিতে উৎসবে রাত মনে হচ্ছিল। এ বছর কোভিড-১৯ এর দাপটে যে প্যানডেমিক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে তাতে করে আমরা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এ পরিস্থিতিতে যতটা নিরাপদে থাকা যায় ততোই ভালো। 

তাছাড়া বাসায় আছি। বাসায় নিজেরা ইনজয় করছি। ব্যস্ত সময়ই পার করছি। পরিবারের সকলে মিলে প্রতিটি মুহুর্ত উপভোগ করছি। এই সময়তো আর সবসময় থাকবে না। ইনশাআল্লাহ আগামী বছর সবাই মিলে ‘চাঁদ রাত’ সেলিব্রেট করব।

 

সুখবর: ঈদের দিনকে ঘিরে কি পরিকল্পনা করছেন?

আফরোজা: ঈদের নামাজ বাসাতেই পড়ব, পরিবারের সাথে। এর পর স্থানীয় একটি ইসলামিক সংগঠন আয়োজিত অনলাইনে লাইভ খুতবায় অংশ নিব। এটি শেষ হলে বেলা ১২টায় টরোন্টো ঢাকা ক্লাবের ভার্চ্যূয়াল ঈদ উদযাপন আয়োজনে সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। দেশে মাবাবা, আত্মীয়, পরিজনসহ বন্ধুবান্ধবদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করব। দুপুরের পর শহর থেকে দূরে কোথাও যাওয়া হতে পারে। সেটিও যথাযথ 'সোস্যাল ডিসটেন্স' এর নিয়ম  মেনে। এই পরিস্থিতিতে সবাই সবাইকে সহোযোগীতা করলে আমরা সকলেই ভালো থাকব।

 

সুখবর: আপনি শুরুতে বলছিলেন লকডাউন পরিস্থিতিতেও কাজে যেতে হচ্ছে। সে বিষয়ে যদি কিছু বলেন।

আফরোজা: আমি হেলথ সেক্টরে কাজ করি। একজন ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কার।  কার্ডিয়াক বিভাগের রোগীদের সেবা দিতে হয়। সব রোগীদেরই আমি অনুরোধ করি যেনো তারা যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা মেনে চলেন। আমি ওঁদেরকে এটা বলি যে, ‘তুমি যদি আমাকে সহযোগীতা কর তবেই আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারব। তারা নিজেরাও এ পদ্ধতি মেনে চললে নিজেরাও করোনা মুক্ত থাকতে পরবে। আশপাশের মানুষও এর ফল পাবে। 

আমার পরিবারের অন্যরা লকডাউনে ঘরেই আছে। আমাকেই শুধু কাজে যেতে হচ্ছে। সুতরাং বাইরের যত কাজ সবই আমি করছি। হয়তো কাজ থেকে আসার সময় গ্রোসারি করে ফিরছি। প্রতিদিন বাজারে না গিয়ে পনের দিনে বা সপ্তাহে একবার যাচ্ছি। বাড়ি ফিরে ঘরে ঢোকার আগে ক্লিন হচ্ছি। এর আগে কারও সংস্পর্শে যাচ্ছি না।

আমাদের সৌভাগ্য কানাডায় আছি। আমার ছেলে এ বছরই ইউনির্ভাসিটিতে গেছে। এখন বাসায় আছে। অনলাইনে ক্লাসে এটেন্ড করছে। মেয়েও পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করত। সেও বাসায় আছে। বাড়ির কর্তাও এখন বাসাতেই থাকছে। তবুও সরকারি নানা পদক্ষেপের কারণে আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতেও নিরাপত্তাহীনতায় নেই। এটাই স্বস্তির কথা। আদতে পরিবারের সকলে মিলে কোয়ালিটি টাইম পাস করছি।

 

সুখবর: সুখবরের পাঠকদের কিছু বলতে চান?

আফরোজা: সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে বলতে চাই- সামাজিক দুরুত্ব মেনে চলুন। স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কেউ ঝুঁকি নিবেন না। হয়তো আর কয়েকটা দিন কষ্ট করলে আমরা করোনাভাইরাসকে জয় করতে পারব। সবাই মিলে আগামী বছরই হয়তো ‘চাঁদ রাত’ উদযাপন করতে পারব। ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে পারব সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে।