ঘরে থেকে ঈদের দিনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলি : কাজী সাকী

By: রাশেদ শাওন ২০২০-০৫-২২ ৩:৪৪:০৭ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১০:৪৫:২৯ এএম সাক্ষাতকার
কাজী সাকী

কাজী সাকী। টরোন্টো বাংলা কমিউনিটিতে প্রিয় ও পরিচিত মুখ। বিচেস ইস্ট ইয়র্ক এলাকার এমপি ন্যাথানিয়েল আরস্কিন-স্মিথের অফিসে কর্মরত। এছাড়া সামাজিক সংগঠন টরোন্টো ঢাকা ক্লাবের ট্রেজারার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন টরোন্টোস্থ প্রবাসী নেত্রকোণা সমিতি’র।

সম্প্রতি তিনি সুখবরকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এবারের ঈদুল ফিতর কেমন হতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া কিভাবে এই ঈদটি উপযাপন করবেন সে বিষয়েও কথা বলেছেন। চলুন জেনে নিই তার এবারের ঈদ ভাবনা সম্পর্কে।  

 

সুখবর : কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর সব ধরণের বড় জামায়েত নিষিদ্ধ। সেই নিয়মে এবারের ঈদুল ফিতরের আগের রাতে ‘চাঁন রাত’র কোনো আয়োজন থাকছে না। গত কয়েক বছর ধরে টরোন্টোর ড্যানফোর্থে ‘চাঁন রাত’ ঘিরে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। সেটা এবারে হচ্ছে না। এ বিষয়ে আপনার কি অভিমত?

কাজী সাকী : টরোন্টো ঢাকা ক্লাব গত তিন বছর ধরে ‘চাঁন রাত’-এ মেহেদী উৎসবের আয়োজন করে আসছে। এ বছর সেটি হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। উৎসব প্রতি বছরই আসে, আসবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের ফলে যে দুর্যোগ চলছে তার থেকে বাঁচতে সকলেরই স্যোসাল ডিসটেন্স মেনে চলা বাধ্যতামূলক। তাই ‘চাঁন রাত’কে ঘিরে আমাদের কমিউনিটিতে যে উৎসব হয় তা এবারে হচ্ছে না। এতে হয়তো মন খারাপ হবে। কিন্তু আমি বলব, সবার আগে জীবনের সুরক্ষা নিশ্চত করতে হবে।

 

সুখবর : ডেনটোনিয়া পার্কে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আপনি সেই আয়োজনের সাথেও পরোক্ষভাবে জড়িত। এবারে এই জামাতটিও কি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না?

কাজী সাকী : এরই মধ্যে সৌদি আরবে সরকারিভাবে ঘোষণা হয়েছে, এবার ঈদের নামাজ নিজ নিজ ঘরে আদায় করতে হবে। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটির সময় সেখানে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। ঈদের সময় মসজিদগুলো বন্ধ থাকবে। 

টরোন্টো তথা কানাডাতে ঘরে ঈদের নামাজ আদায়ের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের কমিউনিটিতে ডেনটোনিয়া পার্কে ঈদের জামাতটি সবচেয়ে বড়। এ বছর আয়োজকরা (ড্যানফোর্থ ইসলামিক সেন্টার) এরই মধ্যে মাঠে ঈদের জামাত না করার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তারা একটি ভার্চ্যুয়াল খুতবার আয়োজন করেছে। ঈদের দিন রোববার বেলা সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এই খুতবা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামের খুতবার পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন টরোন্টো সিটি মেয়র জন টরি, বিচেস ইস্ট ইয়র্ক’র এমপি ন্যাথানিয়েল আরস্কিন-স্মিথ, এমপিপি রিমা বার্ন্স-ম্যাকগাউন, স্কারবোরো সাউথওয়েস্ট এলাকার এমপিপি ডলি বেগম, বিচেস ইস্ট ইয়র্ক’র কাউন্সেলর ব্র্যাড ব্র্যাডফোর্ড। এই অনলাইন খুতবায় যে কেউ অংশ নিতে পারবেন। 

এর বাইরে সবাই পারিবারিকভাবে এবারের ঈদ উদযাপন করবেন। বিগত বছরগুলোতে বিচেস ইস্ট ইয়র্ক’র  এমপি ন্যাথেনিয়েল এরিকসন স্মিথ ঈদের জামাত শেষে বাঙালির কমিউনিটির মুসলিম পরিবারগুলোর দাওয়াতে গেছেন। এবারে তেমন কিছু হচ্ছে না। 

এদিকে টরোন্টো ঢাকা ক্লাব তাদের সদস্যদের নিয়ে ভার্চ্যুয়াল ঈদ সেলিব্রেশন পার্টির আয়োজন করেছে। এটি শুরু হবে বেলা ১২টায়। এতে ক্লাবের সদস্যরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সকলের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এতে অংশ নেবেন বিচেস ইস্ট ইয়র্ক’র এমপি ন্যাথানিয়েল আরস্কিন-স্মিথ,, স্কারবোরো সাউথওইস্ট এলাকার এমপিপি ডলি বেগম, বিচেস ইস্ট ইয়র্ক’র কাউন্সেলর ব্র্যাড ব্র্যাডফোর্ড, স্কারবোরো সাউথওয়েস্ট এলাকার কাউন্সেলর গ্যারি ক্রফোর্ডসহ প্রমুখ। 

 

সুখবর : আপনি ব্যক্তিগতভাবে কিভাবে ঈদ উদযাপন করবেন এবার?

কাজী সাকী : বাসায় ঈদের রান্নাবান্না হবে। এ বছর ঈদ হচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে। তাই বাসাতেই থাকবে সবাই। আমরা ভার্চ্যূয়ালি বেশকিছু ভিডিও আড্ডায় অংশ নিব। এর বাইরে ঘরেই থাকছি। খুব কাছের এক-দুইজন বন্ধু ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে আসবে হয়তো। তবে পরিবারের অন্য সদস্যরা আসবে না। ঈদের বিশেষ রান্না পরিবেশনের পাশাপাশি আড্ডা হবে তাদের সাথে। আর বাংলাদেশে আত্মীয়, পরিজনের সাথে কথা হবে ঈদের দিনে। অন্যান্যবার ঈদের পরদিন তাদের সাথে কথা হয়। এ বছর যেহেতু পৃথিবীর সবস্থানে মুসলমানরা ঘরে থেকে ঈদ উদযাপন করছে তাই মোবাইলে অথবা অনলাইন আড্ডার মাধ্যমে সকলের সাথে কুশল বিনিময় ও ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে চাই।

 

সুখবর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সুখবরের মাধ্যমে আপনার পরিচিত জনদের কিছু বলতে চান কি?

কাজী সাকী : সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক। কানাডার ফেডারেল গর্ভমেন্টকেও বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। কেননা তাদের যোগ্য নেতৃত্ব ও তৎপর ব্যবস্থার কারণে এদেশে কারও ঘরে খাবারের কষ্ট নেই। তাদের নেওয়া যথার্থ পদক্ষেপের কারণে প্যানডেমিক পরিস্থিতিতেও আমরা সবাই ভালো আছি।

আর এবার যেহেতু সকলেই ঘরে থেকে ঈদ উদযাপন করছে সেহেতু নজিরবিহীন একটি ঈদ উপভোগ করবে সবাই। টরোন্টোর বাঙালি কমিউনিটির কাছে ঈদ মানে শুধুই নতুন কাপড় নয়। তাই নতুন জামাকাপড় কিনতে পারছে না বলে তাদের কোনো দুঃখ নেই বলেই আমার বিশ্বাস। আমি বলব, ঈদের দিন সবাই ঘরেই থাকি, ঘরে থেকে ঈদের দিনকে আনন্দে ভরিয়ে তুলি।