হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের ‘হ্যান্ডসেক’ করাচ্ছে লাইভগুলো: আহমেদ হোসেন

By: রাশেদ শাওন ২০২০-০৫-১৮ ৬:২৭:৫৬ এএম আপডেট: ২০২৪-০৪-১৯ ৫:১৯:২৩ পিএম সাক্ষাতকার
আহমেদ হোসেন

টরোন্টো শহরে বাঙালি কমিউনিটর প্রিয় মুখ আহমেদ হোসেন। কর্মঠ, ন্যায়নিষ্ঠ সংস্কৃতিক কর্মি হিসেবে তিনি সুপরিচিত। তার তত্ত্বাবধানে এই শহরে পরিচালিত হচ্ছে আবৃত্তির দল ’অন্যস্বর টরন্টো’ ও ‘অন্যথিয়েটার টরন্টো’। দুটি সংগঠনই কোভিট-১৯ এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও নিয়মিত অনলাইন লাইভ অনুষ্ঠান করে যাচ্ছে। তাদের পরিচালিত সংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সংযুক্ত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলা কমিউনিটিকে।

সম্প্রতি shukhobor24.com কথা বলেছে আহমেদ হোসেন’র সঙ্গে। আজকের সাক্ষাতকারে থাকছে তাঁর সাথে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ।

 

সুখবর: কোভিড-১৯ এর প্রাদূর্ভাবে প্রায় সবকিছুই বন্ধ। বন্ধা এই সময়ে ভিতর কেমন আছেন আপনি?

আহমেদ হোসেন : ভালোই আছি বলব। নানা আয়োজন চলছে- ‘অন্যস্বর টরন্টো’ ও ’অন্যথিয়েটার টরন্টো’ থেকে। অনলাইনে আমাদের কার্যক্রম চলছে নিয়মিত। আসলে আমরা বসে নেই। আমাদের জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি।

 

সুখবর : অনলাইনে আপনাদের যে কার্যক্রম এটা কিভাবে শুরু করলেন?

আহমেদ হোসেন :  প্যানডেমিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার অনেক আগে থেকে অলনাইনে আমাদের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারের কাজ শুরু করি। গত ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা টানা ১৬ দিন ধরে অনুষ্ঠান করি। সেই অনুষ্ঠানটি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরো আয়োজনটি অনলাইনে লাইভ অন এয়ার হয়েছে। প্রচন্ড ঠাণ্ডা, তুষার উপেক্ষা করে আমরা অনুষ্ঠান চালিয়ে গেছি। কোনো পরিস্থিতিতেই আমাদের কার্যক্রম বন্ধ থাকেনি। 

 

সুখবর : তাহলে কি অনেক আগে থেকে আপনাদের প্রস্তুতি ছিল?

আহমেদ হোসেন : ‘অন্যস্বর’ ও ’অন্যথিয়েটার’ অনলাইনে লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচারের বিষয়ে আগে থেকেই অভিজ্ঞ ছিল। সেজন্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ঘরে বসে থাকিনি। জনা বিশেক মানুষ নিয়মিত আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে যাচ্ছি। এতে বেশ ভালো সাড়াও পেয়েছি। তাছাড়া অনলাইনে অনুষ্ঠান করার মধ্যে এক ধরণের আনন্দও আছে বলতে গেলে। লাইভ যখন যাচ্ছে তখন কেউ কেউ দেখছেন। আবার অনেকেই সময় করে উঠতে পারছেন না। তারা পরে দেখে নিচ্ছেন। আসলে অনলাইনে কখন কোন কনটেন্ট লোকে দেখবে তা বলা মুশকিল। কখন কি ভাইরাল হবে সেটাও বলা যায় না।

 

সুখবর : এই যে এতো এতো লাইভ চলছে প্রতিদিনই সেসবের গুরুত্ব কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?

আহমেদ হোসেন : ওই যে বললাম কখন লোকে কি দেখবে বা গ্রহণ করবে তা আমরা কেউ বলতে পারি না। তাছাড়া পুরো বিষয়টিকে আমার মনে হয়, ঘরে থেকে বিপ্লব করার মতো। এ নিয়ে আমি অনেকের সাথে ডিবেটও করেছি। আমরা নিয়মিত অনুষ্ঠান করে যাচ্ছি। আমাদের সাথে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব ও আবৃত্তিকার, ইউএস থেকে, জার্মানি থেকেও অতিথিরা আমাদের লাইভে অংশ নিচ্ছেন। নাম ধরে বলতে গেলে বলতে হয়-আবৃত্তির দিকপাল জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ডালিয়া আহমেদ,  নাট্য অধ্যাপক ইস্রাফিল শাহীন, আবৃত্তিকার লায়লা আফরোজ, বেলায়েত হোসেন, রানা ঠাকুর, মেহেদী হাসান, মিথুন আহমেদ, নাট্যকর্মী অলোক বসু, অভিনেতা খুরশীদুজ্জামান উৎপল, ডাক্তার এমডি দেবাশীষ মৃধা প্রমুখ। প্রাণবন্ত আড্ডা চলছে, গান কবিতা করছি, কথা হচ্ছে নানা বিষয় নিয়ে। এসবই কিন্তু সময়কে এগিয়ে নিচ্ছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে অনেকেই বলছে, এ সব ফালতু, এ সবের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমি বলব মানুষতো দেখছে, শুনছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অনেকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কাজও হচ্ছে। এখন যে পরিস্থিতি তাতে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। সামাজিক দুরুত্ব মেনে চলছেন সবাই। সে সময় সবার সাথে যোগযোগের জন্যে লাইভগুলো নতুন দরজা খুলে দিয়েছে বলেই আমার মতামত।

এছাড়া সকলে সকলের কথা বলছেন। কোনটি গুরুত্বপূর্ণ আর কোনটি নয় সেটা আমজনতা ঠিক করবে। এটা নিয়ে নেতিবাচকতার কিছু নেই। সত্যি বলতে- হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের ’হ্যান্ডসেক’ করাচ্ছে লাইভগুলো।

 

সুখবর : ব্যক্তি ‘আহমেদ ভাই’ কেমন আছেন?
 

আহমেদ হোসেন : ঘর থেকে অফিস করছি। সপ্তাহে দুই দিন সংগঠন নিয়ে কাজ করছি। আমার স্ত্রী ফ্রন্ট লাইনে কাজ করেন। তাকে বাইরে যেতেই হচ্ছে। তবে সেটিও ভালো লাগে। লোকে সেবা নিতে এসে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। এতে আমিও নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করি। আর আমার মেয়ের জন্যে বছরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে ম্যাকগ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারো প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস নেবে অনলাইনে। সব মিলিয়ে চলে যাচ্ছে।

 

সুখবর : সময় দেওয়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।

আহমেদ হোসেন : সুখবর অন লাইনের জন্যে শুভকামনা। ম্যাগাজিনটি যেমন লোকে পড়ছে তেমনি অনলাইনটিও ভালো করবে, এই শুভ কামনা রইল। 

 

#রাশা #সুখবর-সাক্ষাতকার #সুখবর