স্মরণ : চে’র অন্তিম লড়াই

By: সুখবর ডেস্ক ২০২০-০৬-১৪ ৩:৪০:৫০ পিএম আপডেট: ২০২৪-১২-২১ ১১:৫৪:১৭ এএম ইতিহাস
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা
চে গেভারা (চে গুয়েভারা)

৭ অক্টোবর, ১৯৬৭। বলিভিয় রেঞ্জারদের এক ইনফর্মার দুর্গম ও সংকীর্ণ  ইউরো গিরিখাতের মধ্যে চে গেভারার গোপন গেরিলা ক্যাম্পের হদিশ পেয়েছিলেন।  তাই, ৮ তারিখ সূর্যোদয়ের আগেই জঙ্গল ঘিরে ফেলেছিল দুই ব্যাটেলিয়ান বলিভিয় সেনা। সংখ্যায় তারা ১৮০০।

শুরু হয়েছিল এক অসম যুদ্ধ। যা বিপ্লবী গেরিলা বাহিনীর রক্ত ঝরিয়ে শেষও হয়েছিল দ্রুত। আমেরিকার হাতের পুতুল, বলিভিয়া সরকারের সেনাদের হাতে আত্মসমর্পণ করেন ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বকাঁপানো গেরিলা নেতা  এর্নেস্তো চে গেভারা।

আর্জেন্টাইন ডাক্তার এবং চরম বামপন্থী  বিপ্লবী, যিনি ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে না থাকলে বুঝি কিউবার স্বাধীনতা আসত না। সেই অকুতোভয় মানুষটা ধরা পড়লেন আড়াই বছর আত্মগোপন করে থাকার পর। কিউবাকে স্বাধীন করার কৃতজ্ঞতায় বন্ধু চে গেভারাকে কিউবার মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো।
 
রক্তে যাঁর বিপ্লবের আগুন, তাঁর মন্ত্রীত্বের কুর্সি ভালো লাগবে কেন! তাই হেলায় কুর্সি ছুঁড়ে ফেলে নেমে পড়লেন আফ্রিকা ও  লাতিন আমেরিকার কিছু দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে। শুরু করলেন বলিভিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ। তৈরী করলেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (বলিভিয়া)।

কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা আগে থেকেই আটঘাট বেঁধে রেখেছিল প্রচুর অর্থ ছড়িয়ে। ফলের অসফল হয় তাঁর রণকৌশল। স্থানীয় লোকেদের সমর্থন পান না, যেটা চে গেভারা পেয়েছিলেন কিউবায়।

চলুন জেনে নিই চে’র অন্তিম লড়াইয়ের সেই মুহূর্তগুলো।

 

৮ অক্টোবর, ১৯৬৭ (ভোর)

হ্যান্ড মেশিনগান থেকে কান ফাটানো ট্যাট- ট্যাট শব্দ তুলে ছুটে আসছে গুলি। বাতাসে উড়ছে  ক্ষতবিক্ষত ঝোপের ডালপালা,পাতার  খন্ডগুলো। ততক্ষণে চারিদিকে লুটিয়ে পড়েছে বিশ্বস্ত কয়েকজন সঙ্গীর লাশ। গুলিতে এফোঁড় ওফোঁড় হয়েছে তাঁর দুটি পা। হাত থেকে বহুদিনের সঙ্গী রাইফেলটিও ছিটকে ঝোপের মধ্যে হারিয়ে গেছে। ইউরো গিরিখাত ঘিরে ফেলেছে আমেরিকার প্রশিক্ষণ নেওয়া বলিভিয়ার সেনা।

বৃত্ত ছোট করতে করতে ক্রমশ এগিয়ে আসছে তারা। একটা গাছের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে পকেট থেকে হাভানা চুরুট বের করতে যাবেন। ঠিক তখনই সামনে এসে দাঁড়াল জনা কয়েক বলিভিয়ান সেনা। রাইফেল তাক করল তাঁর ওপর। যাঁকে লাতিন আমেরিকার জঙ্গলে জঙ্গলে ক্ষ্যাপা হায়নার মতো খুঁজছিল আমেরিকা। রাইফেলের নলের সামনে শান্ত হয়ে হাতের পাতাটা রাখলেন। 

‘গুলি কোরো না। আমি চে গেভারা। মৃত চে গেভারার চেয়ে জীবিত চে গেভারার দাম অনেক বেশি।”


৮ অক্টোবর, ১৯৬৭ (দুপুর)

আহত চে গেভারার পায়ের ক্ষত থেকে রক্ত ঝরেই চলেছে। সেই অবস্থায়  জঙ্গল পথে তাঁকে প্রায় চার মাইল  হাঁটিয়ে, বলিভিয় সেনারা নিয়ে এলো, লা হিগুয়েরা শহরের বাইরে এক স্কুল বাড়িতে। শুরু হলো জিজ্ঞাসাবাদ। সেনা বাহিনীর হাতে শোচনীয়ভাবে আহত চে গেভারাকে দেখেছিলেন বলিভিয় সেনার পাইলট জাইমে নিনো ডি গুনজমান।

গুনজমান অবাক হয়ে দেখেন, যিনি আর্জেন্টিনার লোক হয়েও  কিউবাকে স্বাধীন করতে রক্ত ঝরিয়েছেন। তাঁর মাথার চুলে জট, সারা গায়ে ধুলো। শতচ্ছিন্ন পোশাকে লেগে রয়েছে শুকিয়ে যাওয়া রক্ত। হাত পা বাঁধা। গুনজমান পরে মিডিয়াকে বলেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় চে গেভারার মাথা সব সময় উঁচু ছিল। সরাসরি প্রশ্নকর্তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে একের পর এক প্রশ্ন শুনে চলেছেন। কিন্তু উত্তর দিচ্ছেন না।

 


 

বলিভিয়ান সেনাদের হাতে ধরা পড়লেন চে

বাকি দিনটা  আহত চে গেভারার উপর অকথ্য অত্যাচার চলল। তারপরও বলিভিয়ান আর্মি কমান্ডারা জীবিত কমরেডদের সম্পর্কে চে গেভারার মুখ থেকে একটি শব্দ বার করতে পারলেন না। বুটের লাথি, ছুরির খোঁচা, সিগারেটের ছ্যাঁকা সহ্য করতে করতে ঠাণ্ডা গলায় তামাক চাইছিলেন। গুনজমান তাঁকে এক প্যাকেট তামাক দেন।

চে গেভারা আহত হাতে পাইপে তামাক ঠাসতে ঠাসতে তাঁকে ধন্যবাদ দেন। ৮ তারিখ রাতে, গেভারার বিখ্যাত পাইপ নিজের কাছে স্মারক হিসাবে রাখবার জন্য গেভারার ঠোঁট থেকে ছিনিয়ে নিতে যান ক্যাপ্টেন এসপিনোসা। তিনি একজন বলিভিয়ান আর্মি অফিসার।

হাত বাঁধা অবস্থাতেই এসপিনোসাকে জোড়া পায়ে লাথি মেরে দূরের দেওয়ালে ফেলে দেন চে গেভারা। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে বলিভিয়ার রিয়ার অ্যাডমিরাল উগার্তেচের মুখে থুতু ছুঁড়ে দেন চে গেভারা, তাঁর সঙ্গে নোংরা ভাষায় কথা বলার জন্য।

 

৯ অক্টোবর ( সকাল)

চে গেভারা গ্রামের কয়েকজন স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। তাঁদের মধ্যে জুলিয়া কোর্তেজ নামে একজন ২২ বছর বয়েসি শিক্ষিকা পরে বলেছিলেন, “আমি দেখেছিলাম শান্ত একজন মানুষকে। যাঁর চাহুনি একই সঙ্গে নরম এবং কঠিন। কথা বলার সময় চে গেভারার চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। কারণ তাঁর চাহুনি সহ্য করতে পারছিলাম না। নেশা ধরিয়ে দিচ্ছিল”।

সামান্য কথা বার্তা, তারই মধ্যে চে গেভারা জুলিয়াকে ভাঙাচোরা পরিত্যক্ত স্কুলের ছাদ দেখিয়ে বলেছিলেন, “এই হল স্কুলের অবস্থা। আর আপনি কি মনে করছেন, বলিভিয়ার ছাত্ররা শিক্ষিত হবে? গভর্মেন্ট অফিসাররা কিন্তু মার্সিডিজ গাড়ি চালাচ্ছেন। আমরা এরই বিরুদ্ধে লড়ছি”।

বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট রেনে ব্যরেন্টোস, সকাল দশটা নাগাদ, চে গেভারাকে হত্যা করার আদেশ দিলেন। চে গেভারার মৃত্যু পরোয়ানা এসে গেল সেই ইউনিটের কাছে। যেটির কম্যান্ডার একজন কিউবান। যিনি আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র হয়ে কাজ করছেন বলিভিয়ায়। এবং বলিভিয়ান কমান্ডারের ছদ্মবেশে। নাম ফেলিক্স রড্রিগেজ।

আমেরিকা চাইছিল জীবিত চে গেভারাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পানামা নিয়ে যেতে। কিন্তু বলিভিয়ার নেতৃত্ব চাইছিল চে-এর মৃত্যু। কারণ তারা ভয় পাচ্ছিল জনসমক্ষে চে-এর  বিচার হলে, চে গেভারা পুরো বলিভিয়ার মানুষের সহানুভূতি পাবেন। ফলে আবার উস্কে উঠবে বলিভিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন। এছাড়াও সমর কৌশলে কিংবদন্তি চে গেভারা, কখন কী ভাবে জাল কেটে বেরিয়ে যাবেন কেউ জানে না।

আমেরিকা সরকার চে গেভারাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জীবিত চাইছিলেন। তাই আমেরিকাসহ সারা বিশ্বকে বোকা বানাতে সাজানো হল ছক। যুদ্ধে মারা গেছেন অবিসংবাদিত গেরিলা নেতা চে গেভারা। চে’কে ধরে আমেরিকার হাতে তুলে দিতে কিউবা থেকে বলিভিয়ায় আসা ফেলিক্স রড্রিগেজ কিন্তু দ্বিধায় ছিলেন।

তাঁর একবার মনে হয়েছিল চে গেভারা তার দেশের অনেক মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। আবার এই চে গেভারা তাঁর দেশ কিউবাকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছেন। কিন্তু বলিভিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে বলিভিয়ার বিরুদ্ধাচরণ সম্ভব নয়। তাই ফেলিক্স রড্রিগেজ তাঁর ইউনিটে খোঁজ করলেন ঘাতকের।

ঘাতক হিসেবে নিজে থেকেই এগিয়ে এলেন, বলিভিয়ান আর্মির ২৭ বছর বয়সি সার্জেন্ট মারিও টেরান। মদ্যপ হিসেবে ইউনিটে যিনি কুখ্যাত ছিলেন। তাঁর ইউনিটের তিনজন সৈনিক, চে গেভারার গেরিলাদলের সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছির বিভিন্ন সময়। তাই সেই রাগে তিনি দ্বায়িত্ব নিলেন চে গেভারাকে হত্যা করার।

 

মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে চে

চে’কে হত্যার আধ ঘন্টা আগে কম্যান্ডার ফেলিক্স রড্রিগেজ চে গেভারাকে জিজ্ঞাসাবাদের শেষ চেষ্টা করেন। কিন্তু চে গেভারা নিরুত্তোর থাকেন। কমান্ডার তখন আহত চে গেভারাকে কয়েকজন সেনার সাহায্যে নিজের পায়ে দাঁড় করান। ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন।

সমবেত সেনার সঙ্গে চে-এর  ছবি তোলা হয়। তারপর চে গেভারাকে  রড্রিগেজ জানান, তাঁর  মৃত্যুদণ্ড একটু পরে কার্যকর করা হবে। একজন সেনা অফিসার গেভারাকে জিজ্ঞেস করেন, চে গেভারা তাঁর অমরত্বের কথা চিন্তা করছেন কিনা। চোখে চোখ রেখে চে গেভারা বলেছিলেন, “না, আমি চিন্তা করছি বিপ্লবের অমরত্বের কথা”।

বেলা তখন বারোটা হয়তো। চে গেভারা এখন আবার সেই ঘরে। তাঁর বধ্যভূমিতে। আবার ঘরে ঢুকলেন রড্রিগেজ। চে গেভারা হাঁটু মুড়ে বসেছিলেন। দরজা খোলার ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে মুখ তুলে তাকালেন। রড্রিগেজ, চে গেভারাকে বললেন,  মৃত্যু আসন্ন। চে গেভারা, রড্রিগেজের দিকে ভাবলেশহীনভাবে তাকালেন এবং বললেন, “আমাকে মৃত অবস্থায় পাওয়ার চেয়ে এই পদ্ধতি ভাল।” 

রড্রিগেজ, চে গেভারার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন এবং তাঁকে জড়িয়ে ধরেন। চে গেভারার দিক থেকে সাড়া আসে না। তারপর রড্রিগেজ ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। সার্জেন্ট মারিও টেরানকে বলেন চে গেভারার ঘাড়ের নিচে গুলি করতে। যাতে বলিভিয়ার মানুষকে বোঝানো সম্ভব হয়, তাঁদের স্বাধীনতার স্বাদ দিতে আসা, গেরিলা যুদ্ধের অবিসংবাদি নায়ক চে গুয়েভারা  যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

চে গেভারাকে হত্যার দায়িত্ব নেওয়া অফিসার সার্জেন্ট টেরান ঘরে ঢুকলেন। ঘাতকের দিকে চোখ তুলে তাকালেন  চে, নিস্পৃহ দৃষ্টিতে।

“আমি জানি তুমি আমাকে মারতে এসেছো” বলে মৃদু হাসলেন।

“নাও, গুলি করো, তুমি কেবল একজন মানুষকে মারতে পারবে। তার মতাদর্শকে নয়।”

আর একটিও কথা না বলে, টেরান প্রথমে চে গেভারার হাতে, তারপর পায়ে, তারপর গলায় নবম গুলিটি করলেন। একটুও আওয়াজ না করে, চোখ খুলে গুলি খেতে খেতে, চোখ খুলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন চে গেভারা। মাত্র ৩৯ বছর বয়েসে।

দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে বলিভিয়া সরকার চে গেভারাকে মৃত বলে ঘোষণা করলো।

ওই দিন বিকেলে বিবিসি সংবাদে প্রচারিত হল, গেরিলাদের সঙ্গে বলিভিয়ান সেনাদের সম্মুখযুদ্ধে মার্ক্সবাদী বিপ্লবী এর্নেস্তো চে গেভারা নিহত।

চে গেভারার মৃতদেহ গোপনে কবর দেওয়ার আগে, বলিভিয়ার সেনারা রক্তাক্ত চে গেভারার দেহ বলিভিয়ার ভালেগ্রাণ্ডে গ্রামে নিয়ে আসে। বলিভিয়ার মিডিয়া সেখানে পৌঁছে যায়। একটা ফটোসেশনও হয়। ঠিক সেইভাবে, যেভাবে রাজা মহারাজারা জঙ্গলে বাঘ বা সিংহ মেরে তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন।

চে গেভারার শব, এরপর লুকিয়ে রাখা হয় একটি হসপিটালের লন্ড্রির চৌবাচ্চায় মধ্যে। তার ছবি এক ফটোগ্রাফার লুকিয়ে তুলে ভাইরাল করে দেন বিশ্বে। মৃত্যুর পরও নিস্তার মেলেনি চে গেভারার। সরকারের আদেশে, বলিভিয়ান কমান্ডাররা মৃত চে গেভারার হাত দুটো কব্জি থেকে কেটে নিয়েছিলেন। যাতে তাঁর ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া যায়। এবং যাতে তাঁর বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোকে বোঝানো যায় চে গেভারা মৃত।

 

চে’র মৃত্যূর পর বিশ্ব প্রতিক্রিয়া

এক সপ্তাহ পর, চে গেভারার কিউবা বিপ্লবের সঙ্গী ফিদেল কাস্ত্রো, কিউবার হাভানা প্লাজা ডে লা রেভোলিউসিয়নের বারান্দা থেকে লক্ষ লক্ষ সমবেত জনতাকে বলেন, “তারা ভুল করছে, যারা বিশ্বাস করে চে গেভারার মৃত্যু তাঁর মতাদর্শের পরাজয়। তাঁর কৌশলের পরাজয়। তাঁর গেরিলা চিন্তাধারার পরাজয়। চে গেভারা ও তাঁর চিন্তধারা অমর। তাঁর মৃত্যু নেই। 

সত্যিই চে গেভারার  মৃত্যু হয়নি। তাইতো তাঁর মৃত্যুর ৫১ বছর পরেও সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, চে গেভারার মুখ আঁকা টি শার্ট, বেরেট টুপি, ব্যানার। আর্জেন্টিনার প্রবাদপ্রতীম ফুটবলার, মারাদোনার বাহুর উল্কিতে ফুটে ওঠে চে গেভারার মুখ।

আজও  কিউবার সান্টাক্লারাতে চে গেভারার সমাধিতে সারা বিশ্ব থেকে ফুল দিতে আসেন,  লক্ষ লক্ষ মানুষ। আজও চে গেভারার বধ্যভূমি, বলিভিয়ার স্কুল বাড়িটিকে মানুষ দেখতে যান। আজও সেই হসপিটালের লন্ড্রিটিকে বলিভিয়ার মানুষ সংরক্ষণ করে রেখেছেন। আজও লা হিগুয়েরা শহরকে পাহারা দিচ্ছে চে গেভারার সুবিশাল ব্রোঞ্জের মুর্তি। যার নিচে লেখা “তুমিই এনেছ নতুন প্রভাত”।

বৈভব ছুঁড়ে ফেলা একজন গেরিলা ডাক্তারের রোমান্টিক জীবন ও মৃত্যু  বুঝি বিশ্বজুড়ে জন্ম দেয় নতুন বিপ্লবের। না হলে মৃত্যুর ৫১ বছর পরেও কেন বিশ্বের কোনে কোনে, যুবক যুবতীদের বুকে বুকে ঘুরে বেড়ান চে গেভারা! কেন তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন আমেরিকার চক্ষুশূল মানুষটিকে!  আসলে চে গেভারারা ঘুমান না, ঘুমাতে দেন না। একজন কবরে ঘুমান। জেগে ওঠেন হাজার এর্নেস্তো চে গেভারা। ষাট সত্তরের দশকে, বাঙালীর যাকে চিনেছিল চে গুয়েভারা নামে।

 

সূত্র:

Richard Harris- Death of a Revolutionary: Che Guevara’s Last Mission, 
Jon Lee Anderson- Che Guevara: A Revolutionary Life.