টরন্টোতে বাংলাদেশের প্রথম বানিজ্য ফোরাম অনুষ্ঠিত

২০১৯-০৯-০৩ ১:৩৪:২২ পিএম আপডেট: ২০২৪-০৪-১৯ ৪:৪৮:২৫ এএম কানাডা
বক্তব্য রাখেছেন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী, এমপি,
‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’-এর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান
‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’-এর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান

টরন্টোস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ও অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের (ওসিসি) যৌথ ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মত ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী, এমপি, ১৯ সদস্যের বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

নানা বিষয়ে আলোচনা শেষে ফোরামটি বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। বৈশ্বিক সরবরাহ সংযোগ, উচ্চ মূল্যের পোশাক সামগ্রী, হাল্কা প্রযুক্তি পণ্য, ঔষধ সামগ্রী, ডিজিটাল সেবা, পাটজাত পণ্যের শিল্প ভিত্তিক ব্যবহার, সামুদ্রিক মৎস্য, হিমায়িত খাদ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, উচ্চ শিক্ষা, কর্মভিত্তিক শিক্ষা, তৃতীয় ধাপের স্বাস্থ্য সেবা ইত্যাদি খাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় ফোরামটি।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই এবং ওসিসির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকও সাক্ষরিত হয় যা উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং ওসিসি সভাপতি রকো রসি নিজ নিজ চেম্বারের পক্ষে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

এতে বক্তব্য রাখেন অন্টারিও-এর অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য মন্ত্রী ভিক্টর ফেডালি। তিনি বলেন, অন্টারিওর অগ্রাধিকার হল উদার অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাংলাদেশ যার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘দুই শীর্ষ চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর একটি অভূতপূর্ব ঘটনা যা উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করবে।’

বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি, এমপি, বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী  নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ  ১০% জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্বারপ্রান্তে।’

ফোরাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করা এই ফোরামের উদ্দেশ্য। এর ফলে দেশ দুটির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য আদান প্রদান  করতে পারবে এবং তুলনামুলক সুবিধাজনক খাতগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ প্রক্রিয়া অব্যহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রদেশেও অনুরূপ বাণিজ্য ফোরাম আয়োজন করা সম্ভব হবে।’

কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক কূটনীতি সংক্রান্ত নির্দেশনার প্রেক্ষিতে  বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল টরন্টো তার যাত্রা শুরুর মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এ ধরনের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা দুই দেশের ব্যবসা- বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে।’

ওসিসি সভাপতি রকো রসি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও কানাডা উভয় দেশ একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।’

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ফোরাম আগামীতেও অব্যহত থাকবে এবং দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত বাণিজ্য প্রতিনিধি বিনিময় হবে।

এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল  কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অন্টারিও চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি লুই ডিপামা, ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনের কাউন্সেলর মিজ করিন পেট্রিসর, বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মসিউল  আলম, কেনচেম বাংলাদেশের এর সভাপতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ ফোরামে প্যানেল সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ নেন। 

এতে ‘বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ফোরাম-২০১৯’ এ কানাডার বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীবৃন্দ, কানাডিয়ান ব্যবসায়ি, বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, শিল্পপতি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ নির্বাহীবৃন্দ, বাংলাদেশি-কানাডিয়ান ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।