রানি এলিজাবেথ ইংল্যান্ডের যে রাজহাঁসগুলোর মালিক

প্রকাশঃ ২০-১০-১৭ ৪:০২:০৩ এএম
আপডেটঃ ২০২৪-০৫-০২ ২:২১:৪০ এএম
লেখকঃ সুখবর ডেস্ক
রানি এলিজাবেথ ইংল্যান্ডের যে রাজহাঁসগুলোর মালিক
ইংল্যান্ড অধীশ্বরী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হচ্ছেন দেশটির স্থানীয় একটি প্রজাতির সকল রাজহাঁসের মালিক।

ব্রিটেনের রাজপরিবারে দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রথা চালু আছে। ব্যাপারটা যেমন মজার, তেমনি কৌতূহলও জাগায়। ইংল্যান্ড অধীশ্বরী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হচ্ছেন দেশটির স্থানীয় একটি প্রজাতির সকল রাজহাঁসের মালিক। তবে যেনতেন রাজহাঁস নয় তা। মিউট সোয়ান প্রজাতির শ্বেতশুভ্র পালক সজ্জিত পাখিটির চেহারাতেও আছে আভিজাত্য। অবশ্য শুধু হাঁসেদের সেরাটি নয়, তিনি আরও কিছু প্রাণিরও সার্বভৌম মালিক।


এব্যাপারে রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, ‘১২ শতাব্দী থেকেই ইংল্যান্ডের সকল মুক্ত জলাশয়ে বিচরণকারী রাজহাঁস প্রজাতিটির মালিকানা দাবির অধিকার সংরক্ষণ করেন ব্রিটিশ রাজা বা রানি।’

 


 রানি কেন রাজহাঁসের মালিক?

ঐতিহাসিক সত্য হচ্ছে, অসাধারণ রাজকীয় সৌন্দর্যের অধিকারী এ পাখিটিকে শিকারের হাত থেকে রক্ষা করা জন্যেই এ আইন করা হয়। কারণ, ব্রিটিশ অভিজাতদের ভোজ উৎসবের টেবিলে ছিল এর দারুণ কদর। নিজ পছন্দের মুষ্টিমেয় কিছু অভিজাত ব্যক্তিকেও এর মালিকানা লাভের অনুমতি দিতেন রাজা বা রানিরা। প্রাচীনকালে এমন অনুমতি ছিল অত্যন্ত সম্মানজনক। ফলে প্রজাতিটি হারিয়ে যাওয়া থেকেও রক্ষা পায়। 

বর্তমানে সংরক্ষিত প্রজাতির তালিকাভূক্ত হওয়ায় কেউ বিশাল এ রাজহাঁস শিকার করে না। 

শতবর্ষ আগে অবশ্য এমন বিবেচনা ছিল না ইংরেজ জনতার। তাই কেউ যদি রাজহাঁসকে আহত বা হত্যা করতো, তবে তাকে বেশ কিছু গুরুতর শাস্তি ও জরিমানার সম্মুখীন হতে হতো। এমনকি মিউট সোয়ানের ডিম চুরির অপরাধে এক বছরের বেশি সময় কারাবাস করতে হয়েছে অনেককেই।  

বর্তমানে রানি ছাড়া তার অনুমতি নিয়ে মাত্র তিনটি সংস্থা এই প্রজাতিটির উপর মালিকানা অধিকার সংরক্ষণ করে। এর একটি হলো; অ্যাবটসবেরি সোয়ানেরি। ১৪ শতকে এ অধিকার পায় তারা। তারপরেই ১৫ শতকে প্রথমে ভিন্টার্স এবং তারপর সেন্টুরি অ্যান্ড ডায়ার্স নামের আরও দুই সংস্থা সম্মানজনক এ মালিকানা লাভ করে। 


প্রতিটি মিউট সোয়ানের ঠোঁট বা চঞ্চুতেই আঁকা আছে আছে মালিকদের বিশেষ চিহ্ন। তবে যেগুলোর চঞ্চুতে চিহ্ন নেই, তাদের মালিক রানি স্বয়ং। 


মিউট সোয়ান অসাধারণ সুন্দর আর আভিজাত্যের অধিকারী, তাই রানিরাই যে এর মালিকানা সংরক্ষণ করবেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
 

 

রাজহাঁসগুলোর দেখাশোনা কে করে?

রানির রাজহাঁস পর্যবেক্ষনকারী নামের একটি বিশেষ পদ আছে। এই কর্মকর্তা স্থানীয় রাজহাঁস জনসংখ্যার দিকে সতর্ক নজর রাখেন। তিনি নানা প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থাকে রাজহাঁস কল্যাণে পরামর্শ যেমন দেন, ঠিক তেমনি বিপন্ন প্রজাতিটি উদ্ধারে জড়িত নানা সংগঠনের সঙ্গে একযোগে কাজ করে থাকেন। 

প্রতিবছর তিনি থেমস নদীর তীরে 'সোয়ান আপিং' নামের এক উৎসবের আয়োজন করেন। ওই উৎসবে কমলা ঠোঁটের রাজহাঁসগুলোকে ধরে তাদের পায়ে বিশেষ রাজকীয় চিহ্নের আংটি পরিয়ে আবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে বন্য রাজহাঁসগুলোর নজরদারিতে বাড়তি সুবিধা পান সংরক্ষণকারীরা। 

 


সংরক্ষিত মৃত হাঁসগুলোর মালিক কে?

অনেক প্রাণি বা পাখি শিকারের পর তাদের জীবন্ত দেখায় এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ার নাম ট্যাক্সিডার্মি। কিন্তু, জীবিত এবং মৃত সকলের উপর রাজ অধিকার রয়েছে। তাই শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে এ প্রজাতির রাজহাঁসের দেহ সংরক্ষণ করার আগে ট্যাক্সিডার্মিস্টদের রানির পর্যবেক্ষক কর্মকর্তার কাছ থেকে আগে অনুমতি নিতে হয়। 

তবে এজন্য শর্ত হচ্ছে, মুনাফার জন্য এ রাজহাঁসের দেহটি বিক্রি করা যাবে না। 

 

রানি নিজে কী রাজহাঁসটি খেতে পারেন? 

১৯৮০ সালে ক্রমশ জনসংখ্যা কমতে থাকায় ইংল্যান্ডে রাজহাঁসটি শিকার করা সম্পূর্ণ অবৈধ বলে ঘোষণা করে ব্রিটিশ সরকার। তবে অনেকেই মনে করেন, রানি নিজে হাঁসটি খেতে পারেন।  

এটা অবশ্য সত্য নয়। তবে রানি পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই আইনের ঊর্দ্ধে থাকায়- তিনি চাইলে এমনটা করতেই পারেন। 

Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam

Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon

SHOKHOBOR24.COM

2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201

TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA

COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition