তুরস্কে অধ্যয়নরত প্রথম কোনো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসিবে সাইয়েদ রাশেদ হাসান চৌধুরী সর্বোচ্চ স্বীকৃতি লাভ করেছে। আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০১৮-২০১৯) শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সর্বোচ্চ সংখ্যক সিজিপিএ-৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ এবং থিওলজি ফ্যাকাল্টিতে প্রথম হয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কাছ থেকে তিনি ‘মোস্ট সাকসেসফুল স্টুডেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’ (এন বাসারলি ওরেঞ্জি অদুলো) গ্রহণ করেন, গত ৩ জুলাই।
রাজধানী আঙ্কারায় তার্কিশ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ প্রাপ্তদের ৮ম কনভোকেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭৭ দেশের প্রায় ২ হাজার বিদেশি ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করে।
সাইয়েদ রাশেদ হাছান চৌধুরী এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাস্টার্সে অনবদ্য ফলের জন্য ডিন’স মেরিট লিস্ট অব অনার (২০১৫) ও ডিন’স মেরিট লিস্ট অব অ্যাক্সিলেন্স (২০১৮) অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। পাশাপাশ মাস্টার্সে অনবদ্য ফলের জন্য গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন।
রাশেদ ২০১৬ সালে তুরস্কের সরকারি স্কলারশিপ নিয়ে আঙ্কারা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। তিনি সেখানে স্নাতোকোত্তর প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে টানা দুবার সর্বোচ্চ সংখ্যক সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পেয়ে বিদেশি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেকর্ড তৈরি করেন।
সাইয়েদ রাশেদ হাছান চৌধুরীর বাবা সাইয়েদ মো. আলী হোছাইন চৌধুরী, মা সাইয়েদা হাছিনা হোছাইন। তিনি পিতা-মাতার বড় সন্তান।
এই অর্জনের পেছনে শক্তি হিসেবে কী কাজ করেছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাশেদ বলেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, তা বাস্তবে রূপদান করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ অবলম্বন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি। ঢাবি’র অ্যাওয়ার্ডগুলো আমাকে বর্তমান অবস্থায় আনতে সাহায্য করেছে। আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর পৃথিবীর প্রায় ১৮২ দেশের ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি। তখন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারলে গর্ববোধ করতাম। অনেক সহপাঠী বাংলাদেশকে চিনতো না, তারা আফ্রিকান দেশ বলতো। তখন তাদের মানচিত্র দেখিয়ে পরিচয় করিয়ে দিতাম। তখন মনে মনে ভাবতাম, এই দেশে সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় এই রেজাল্ট। এখন আমার ডিন যখন বলে, ‘বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে!’ তখন অসাধারণ অনুভূতি হয়।’
‘পড়ালেখায় সাফল্য অর্জন করতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে সামনে এগুতে হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করার পরেও আমরা লক্ষ্য ঠিক করতে পারি না। ফলে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পরেও অনেকে হতাশ হন। এছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা হলো, আমরা মুখস্থনির্ভর পড়াশুনা করি। যতটুকু সম্ভব, মুখস্থ বিদ্যাকে পরিহার করে সৃজনশীলতাকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
ইচ্ছে আছে শিক্ষাবিদ হওয়ার। ইচ্ছেটা পূরণ হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার উন্নয়নে বৃহৎ পদক্ষেপ নেয়ার ইচ্ছে অবশ্যই আছে। আমাদের দেশের অনেক লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। তারা ছেলেমেয়েদের ঠিকমতো খাবার ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা প্রদানে ব্যর্থ হয়। আমি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসেছি। আমি দেখেছি, একটি দরিদ্র পরিবার তাদের ছেলে বা মেয়ের জন্য কত কষ্ট করে পড়াশুনার ব্যয়ভার বহন করে। আমি যেহেতু একটি রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে জড়িত আছি তাই আমার পরিকল্পনা হচ্ছে, এই সেন্টারের অধীনে চরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ তৈরি করার জন্য প্রতিটি জেলায় শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা। এই শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেয়ার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশে যেতে সাহায্য করা।’ বলছিলেন সাইয়েদ রাশেদ হাসান চৌধুরী।
Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam
Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon
SHOKHOBOR24.COM
2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201
TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA
COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition