কোভিড-১৯ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর দরজায় কড়া নাড়ছে। করোনা দুর্যোগে বাড়িতে কীভাবে ঈদের নামাজ আদায় করবেন মুসলমানরা? ঈদের নামাজ আদায়ে ইসলামিক স্কলারদের মতামতই বা কী?
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী ইসলামিক স্কলাররা অনেক মতামত ব্যক্ত করেছেন। এ সব মতামতের ভিত্তিতে যে বিষয়টি সবার নিরাপত্তায় সর্বাপেক্ষা যুক্তিযুক্ত সেটি হলো-
> মহামারি করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে যে যেখানে অবস্থান করছে সেখানেই ঈদের নামাজ আদায় করবে।
> যে শর্ত মেনে নিরাপত্তার সঙ্গে জুমআ নামাজ আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন ঈদের নামাজের ব্যাপারে সে শর্ত প্রযোজ্য। অর্থাৎ জুমআর নামাজের জন্য দেয়া শর্তগুলো মোতাবেকই ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করতে হবে।
বছরে দুই বার ঈদের নামাজ আদায় করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অনেকে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ভুয়ে যায়। সে কারণে ঈদের নামাজের নিয়ম জেনে নেয়া জরুরি। আর তাহলো-
ঈদের নামাজের নিয়ত
"আমি ইমামের পিছনে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল ফিতরের দু’রাকাত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের (হানাফি মাজহাব অনুসারি হলে) সাথে পড়ছি", এরূপ নিয়ত করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত তুলে তাহরিমা বাঁধবে।
প্রথম রাকাআত
- প্রথমে (সাধারণ নামাজের) তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) বলে হাত বাধা।
- ছানা পড়া
- অতপর হানাফি মাজহাবের অনুসারিরা অতিরিক্ত ৩ তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলা। প্রত্যেক তাকবিরে হাত উঠিয়ে তৃতীয় তাকবিরের পর বাধা। তবে অন্য মাজহাব ও ওলামায়ে কেরাম ৬/৭ তাকবির দেয়ার কথাও বলেন।
- উচ্চ স্বরে সুরা ফাতেহা পড়া এবং অন্য যে কোনো সুরা মেলানো।
- রুকু সেজদা দেয়ার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত আদায় করা।
দ্বিতীয় রাকাআত
- দ্বিতীয় রাকাআতে দাঁড়িয়ে প্রথমেই সুরা ফাতেহা পড়ে অন্য সুরা মিলাতে হবে।
- সুরা মিলানোর পর হানাফি মাজহাবের অনুসারিরা অতিরক্তি তিন তাকবির দবে। ৪র্থ তাকবির দেয়ার পর রুকুতে যাবে। (আর অন্যান্য ওলামায়ে কেরামের মতে দ্বিতীয় রাকাআতে অতিরিক্ত তাকবিরের সংখ্যা হবে ৫টি হবে। ষষ্ঠ তাকবির দিয়ে রুকতে চলে যাবে)
অতিরিক্ত তাবিরের সংখ্যা ৩ এবং ৬/৫ উভয় মতই বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এটি নিয়ে মতপার্থক্যের কোনো কারণ নেই।
- নামাজ শেষে ঈদের খুতবা দেয়া
নামাজ শেষে সবাই ইমামের খুতবা শুনবেন। খুতবা দেয়া প্রসঙ্গেও মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ এটি মনোযোগের সঙ্গে শোনাকে সুন্নাতে মোয়াক্কাদা মনে করেন। তবে সব ওলামায়ে কেরামের মতে ঈদের নামাজের পর খুতবা শোনা সুন্নাত।
তাই যদি কেউ উল্লেখিত নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার পর খুতবা দিতে নাও পারেন তবে তাদের ঈদের নামাজ হয়ে যাবে। খুতবা ছাড়া নামাজ হবে কিনা এ নিয়ে চিন্তা বা সন্দেহের কোনো কারণ নেই।
তবে খুতবা ও অতিরিক্ত তাকবির নিয়ে যে যার যার অনুসরণ অনুযায়ী আমল করবে। এ নিয়মে যার যার অবস্থান থেকে জুমআর শর্ত মোতাবেক পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা যাবে।
তবে ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ঈদের জামাআত না পেয়ে ঘরে পরিবারের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহির এ পদ্ধতি অনুসরণ করেও নামাজ আদায় করা যেতে পারে। বুখারি ও মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বার বর্ণনায় এসেছে-
হজরত ইমাম মালেক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একবার জামাআতে ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি। তিনি বাসায় এসে তার পরিবারের লোকজন যারা ছিলেন, তাদের নিয়ে জামাআতে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছেন এবং নামাজ পড়েছেন। সে হাদিসের আলোকে করোনা পরিস্থিতিতেও এভাবে বাসায়, মহল্লায়, মসজিদে নিরাপত্তার সঙ্গে নামাজ আদায় করা যাবে।
করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে যারা ঈদের নামাজ আদায় করবেন, তারা খুতবা দেবেন কিনা তা নিয়ে আরব বিশ্বের ওলামায়ে কেরাম জানিয়েছেন, ঘরে ঈদের নামাজ আদায়কারীদের জন্য ঈদের নামাজে খুতবা দেয়ার প্রয়োজন নেই। তবে নামাজের নিয়ম মোতাবেক নামাজের শুরু শেষে অতিরিক্ত তাকবিরের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে হবে।
Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam
Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon
SHOKHOBOR24.COM
2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201
TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA
COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition