বাহবায় ভাসলো ‘বাচনিক বৈশাখ’

প্রকাশঃ ২৩-০৫-০২ ৬:০৫:৪১ এএম
আপডেটঃ ২০২৪-১১-২১ ৩:৩৯:৩৯ এএম
লেখকঃ রাশেদ শাওন
বাহবায় ভাসলো ‘বাচনিক বৈশাখ’
বৈশাখ ১৪৩০ উদযাপন অনুষ্ঠান শেষে ‘বাচনিক’ সদস্যরা, ছবি: সুখবর।

নতুন বছরে খেতাব দেওয়ার চল দেশীয় সংস্কৃতিতে বেশ পুরোনো। ঐতিহ্যবাহী ‘খেতাব’ দেওয়ার ধারাটি ৩০ এপ্রিল, রবিবার টরন্টোর একটি মিলনায়তনে ফিরে এলো স্থানীয় আবৃত্তি সংগঠন ‘বাচনিক’র ‘বৈশাখী আয়োজন’ এ।

তাদের পরিবেশনায় ছিল ভিন্ন আঙ্গীক ও অভিনব উপস্থাপনা। দর্শকও এর  ভূষসী প্রসংশা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে অনেকেই ‘বাচনিক’র বাহারি বৈশাখ উদযাপনকে বাহবা জানান।

দুই উপস্থাপক ফ্লোরা নাসরিন ইভা ও ফারহানা আহমদ উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। এর পর  দর্শক সারিতে এসে দাড়ান  আরেক সঞ্চালক জামিন বিন খলিল। ‘বাচনিক’ কর্ণধার মেরী রাশেদীনকে ডেকে নেন তিনি। একটি হলুদ খাম তুলে দেওয়া হয় মেরী’র হাতে। খামটি খুলে আরেকটি খাম বের করে আনেন তিনি। তা তুলে দেন সঞ্চালকের হাতে।

খামের উপরে ছন্দে ছন্দে লেখা বিবরণ পাঠ করেন সঞ্চালক। বিবরণের সঙ্গে মিলে যায় এমন একজন ‘লাজুক হাসির ছেলে’ কে সনাক্ত করেন মেরী। এর পর খাম যায় ‘লাজুক হাসির ছেলে’র খেতাব পাওয়া ব্যারিস্টার ওমর জাহিদের হাতে। তিনি খামটি খুলে বের করেন আরেকটি খাম। সেই খামে লেখা ছিল আরেকটি বিবরণ। সেই বিবরণ পাঠ শুনে এবারে ‘লাজুক হাসির ছেলে’টি সন্ধান করেন ‘দীঘল কালো কেশের বনলতা’কে।

‘রিলে রেস’র ‘রিলে স্টিক’র মতো করে হলুদ খাম ঘুরতে থাকে হাত থেকে হাতে। একে একে সন্ধান পাওয়া যায় ‘বড় কপাল ওয়ালা’, ‘সেলফি বয়’, ‘মনে মনে মডেল’সহ নানান চরিত্রের। বাচনিক আরো খুঁজে পায় তাদের প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্রের জন্যে ‘নায়ক’, ‘নায়িকা’, ‘খল নায়ক’। পর্বটির শেষ হয় ‘গর্ব করার লোক’ টিকে খুঁজে পাওয়ার মধ্য দিয়ে। সেই খেতাবটি পান শ্রদ্ধাভাজন হাসান মাহমুদ। নতুন বছরে অন্যান্য ‘খেতাব’ প্রাপ্তদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি।

‘বাচনিক’র বাংলা নতুন বছর ১৪৩০ উদযাপন অনুষ্ঠানটি এমন ধরনের নানা পর্বে সাজানো ছিল। অভিনব উপায়ে সবগুলো পর্বকে এক সূতায় গেঁথে দর্শকদের বিনোদিত করেন ‘বাচনিক’ সদস্যরা। আয়োজনে ছিল গান, নাচ, ফ্যশন শো, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়সহ নানা পরিবেশনা।

উপস্থিত দর্শকের সরাসরি ভোটে নির্বাচন করা হয় ’বৈশাখী যুবরাজ’ ও ‘বৈশাখী রাজকন্যা’কে। ‘পুঁটি মাছ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া কামরান করিম তেলের ড্রাম, বদনা ও তবলা প্রতীকের প্রার্থীদের পরাজিত করে এবং ‘সেদ্ধ ডিম’ প্রতীক প্রার্থী শিখা আখতারি আহমেদ কচি ডাব, মাটির চুলা ও মিষ্টি কুমড়া প্রতীকের প্রার্থীদের পেছনে ফেলে আগামী এক বছরের জন্যে ‘যুবরাজ’ ও ‘রাজকন্যা’ নির্বাচিত হন।

দু’জন নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্বাচনটি পরিচালনা করেন। তারা নিজেরাই দর্শকদের মাঝে ব্যালট পেপার বিতরন করেন। কোনো রকমের ভয় ভীতি ছাড়াই ভোটাররা আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোট দেন।  সকলের দেওয়া ভোট সংগ্রহ করে রাখা হয় ব্যালট বাক্সে।

পরে সকলের উপস্থিতিতে ভোট গণনা করা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ছাপানো ব্যালোট পেপার, স্বচ্ছ ব্যালোট বাক্স ব্যবহার করা হয়।  

বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নেন বাচনিক সদস্য সোমা সাইদ, শিখা আখতারি আহমেদ, ওয়ালী ইসলাম, রাশীদা মুনির, হোসনে আরা জেমী, ম্যাক আজাদ, অরুণা হায়দার, ডালিয়া আহমেদ, সীমা বড়ুয়া, কামরান করিম, আরিয়ান হক, এঞ্জেল ডি কস্টা, আশিক ওয়াহেদ আসিফ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা ও পরিচালনা করেন জামিল বিন খলিল।

কেক কেটে বাচনিক’র জন্মলগ্ন থেকে গত দশ বছর ধরে যেসব সদস্য এখনও সক্রিয় রয়েছেন তাদেরকে সম্মাননা জানানো হয়।

অনুষ্ঠান শেষ হয় র‌্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে।

আয়োজনটির আপ্যায়নেও ছিলো দেশীয় ঐতিহ্যের আবহ।  মোয়া, মুরকী, সামুচা, আম মাখা, দই বড়া , চিতই পিঠা সঙ্গে পুদিনা পাতার চাটনী আর ঘন দুধের চা পরিবেশর করে আমন্ত্রিত অতিথীদের সাদর সম্ভাষণ জানানো হয়। সকলে খাবার খেতে খেতে গল্প আড্ডায় মেতে উঠে।

এর পর পরিবেশন করা হয় ‘দুপুরের আহার’। এ পর্বে খাবারের তালিকায় পান্তা ভাত এবং সাদা ভাতের সঙ্গে ছিল আলু ভর্তা, সিম ভর্তা, ডাল ভর্তা, শুটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা, শুকনা মরীচ ভাঁজা, কাঁচা লেবু। বিশেষ পদ হিসেবে ছিল- রুই মাছ ভাজা , লাবড়া, আমডাল , মুরগীর ঝাল ঝোল । শেষ পাতে দেয়া হয় রসগোল্লা, নানা ধরনের ফল, সন্দেশ, কেক, ছানার সন্দেশ।

সব মিলিয়ে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উপস্থানের প্রচেষ্টায় কোনো কমতি ছিল না আয়োজকদের। 

 

সুখবর, মে ০১/২০২৩

Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam

Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon

SHOKHOBOR24.COM

2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201

TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA

COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition