“দীর্ঘ ৩৯ দিন পর অবশেষে করোনামুক্ত হলাম”

প্রকাশঃ ২০-০৬-২০ ১২:০১:৩৭ পিএম
আপডেটঃ ২০২৪-১১-২১ ৪:১৩:৫৪ এএম
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল ইমরান
“দীর্ঘ ৩৯ দিন পর অবশেষে করোনামুক্ত হলাম”
তরুণ কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল ইমরান ও তার স্ত্রী সানজিদা আবদুল্লাহ তিন্নি

অবশেষে তরুণ কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল ইমরান করোনা মুক্ত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার আইডি থেকে তিনি জানাচ্ছেন, করোনাআক্রান্ত হওয়ার ২১ দিনের মাথায় একবার নেগেটিভ হয়ে পুনরায় পর পর দুবার পজিটিভ হয়েছিলেন। এমন ঘটনা খুবই বিরল। সঙ্গত কারণে ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতাটি হয়তো সকলেরই জানা দরকার। সে কথা ভেবেই তিনি কিছু জরুরি পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর সেই স্ট্যাটাসটি আমাদের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরছি নিচে।


দীর্ঘ ৩৯ দিন পর অবশেষে করোনামুক্ত হলাম।

এর মধ্য দিয়ে একটি ‘নেগেটিভ’ শব্দ শুনতে আমার যে অনন্ত অপেক্ষা, তার অবসান হলো। অবসান হলো পরিবার, বন্ধু-স্বজন, পাঠক, সহকর্মী এবং জানা-অজানা অসংখ্য মানুষের উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠারও। মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

আমি যেহেতু করোনাআক্রান্ত হওয়ার ২১ দিনের মাথায় একবার নেগেটিভ হয়ে পুনরায় পর পর দুবার পজিটিভ হয়েছি, সেহেতু আমার ব্যতিক্রমী এই অভিজ্ঞতাটা হয়তো সকলেরই জানা দরকার। সে কথা ভেবেই কয়েকটা জরুরি পরামর্শ।

জ্বর, মাথা ব্যথা, সামান্য কাশি ও কানের চারপাশে তীব্র ব্যথার উপসর্গ নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে ১১ মে করোনা পরীক্ষা করাই আমি ও আমার স্ত্রী। সেদিন রাতেই জানতে পারি আমরা ‘পজিটিভ’। মাঠে-ঘাটে কাজ করায় মানসিক প্রস্তুতি ছিল যে, আক্রান্ত হতে পারি। সত্যি বলতে, খবরটা শোনার পর শুরুতে খানিক ভেঙ্গে পড়েছিলাম। বিশেষ করে তিন্নি যখন আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘আমাদের একটা বাবুও নেই!’

দ্রুত নিজেদের সামলে নিয়ে পরিকল্পনা করতে বসি। ঠিক করি, পরিস্থিতির অবনতি না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেব। সেক্ষেত্রে আমাদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধায়নে থাকা প্রয়োজন। এই নিরন্নেরকালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কোথায় পাব?

আমাদের খবর জেনে নিজ উদ্যেগেই প্রিয় আরিফা জেসমিন কনিকা ভাবি প্রফেসর রোবেদ আমীনকে ম্যানেজ করে দিলেন। রোবেদ স্যার আমাদের টেলিমেডিসিন দেওয়ার পাশাপাশি ফলোআপও করেছেন। অন্যদিকে প্রিয় শিক্ষক সাদেকা হালিম আপা বলে দিয়েছিলেন অধ্যাপক ইকবাল আর্সেনাল স্যারকে। এই দুজন লক্ষণের উপর নির্ভর করে আমাদের কিছু ওষুধ দেন। করোনার চিকিৎসায় তারা আস্থা রাখেন হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এবং ডক্সিসাইক্লিনের উপর। এছাড়াও নিয়মিত ফলোআপ করেছেন ডাঃ আশরাফ জুয়েল ও ডাঃ মেহেদী। ওষুধের বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছি না, কেননা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়।

যা জানা প্রয়োজন :

১. আমরা শুরুতেই বাড়ির মালিককে তথ্যটি জানিয়ে দেই, যাতে কেউ আতঙ্কিত না হয়। এতে ভাল ফল মেলে। তিনি সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি, খাবার, ফলমূল ও বোতলজাত পানির ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও একজন দারোয়ানকে নিযুক্ত করেন, যিনি জরুরি জিনিসপত্র এনে দেবেন এবং জমতে থাকা আবর্জণার পাত্রটি নিচে নিয়ে যাবেন।

২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন ডাক্তার। কেননা, পুরো সময়টা ঘরের কাজ ও নিজেদের দেখাশোনায় ব্যস্ত থাকতে হবে। ফলে ফেসবুক অহেতুক অস্থিরতা বাড়াবে। ডাক্তারের কথা না শুনে দু-একবার অবশ্য ঢু মেরে দেখেছি, কথা সত্য। অস্থিরতা বাড়ে। বিশেষ করে যখন দেখবেন, আপনি অসুস্থ্য বলে পৃথবীর তেমন কিছুই থেমে নেই। তখন খুব কষ্ট হবে। আর শত শত (আমার বেলায় হাজার হাজার) ম্যাসেজ ও শুভ কামনার উত্তর দেওয়াও তো অসম্ভব!

৩. করোনা হলে যে নিয়ম-কানুনগুলো (গরম পানির ভাপ নেওয়া, প্রচুর ফল খাওয়া) মানতে হয়, তা শুরু করে দেই। দুজনই পজিটিভ তবু আলাদা কক্ষে থাকতে বলেন ডাক্তার। এছাড়াও অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে বলেন কয়েক ঘন্টা পর পর। তিন্নি বলত বুকে চাপ চাপ লাগছে। আমারও তাই মনে হতো। গভীর রাতে দুজনই দুজনকে চেক করতাম, যে ঠিক মতো নিশ্বাস নিচ্ছে কিনা! কি বেদনার সময়গুলো! অসুবিধা মনে হলেই অক্সিমিটারে মেপে দেখতাম। ডাক্তার বলেছেন, ৯১ পর্যন্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার বা হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না। আমাদের ৯৩ থেকে ৯৭ ছিল সব সময়। তবু জরুরি প্রয়োজনে ১ ঘন্টার মধ্যে বাসায় সিলিন্ডার পৌঁছে দিতে পারবে, এমন একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম। এর বাইরে দুজন উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তাকেও জানিয়ে রাখি, যাতে দরকার হলে হাসপাতাল ম্যানেজ করে দিতে পারে।

৪. অমাদের প্রথম ৭ দিন টানা জ্বর ছিল। শুরুতে ১০২-২.৫ হলেও শেষ দিকে ১০০ থাকত। এক পর্যায়ে রাতে জ্বর আসত। দিনে থাকত না। শরীর খুব দুর্বল লাগত। পেট খারাপ শুরু হলো ৫ম দিনের মাথায়। তিন্নি বমিও করল বেশ কয়েকবার। স্বাদ-গন্ধ চলে গেল। রাতে ঘুম হত না। শরীরের এমন প্রতিটি পরিবর্তণ সম্পর্কেই ডাক্তারকে জানিয়েছি। কখনও ম্যাসেজ করে। তখনও ফোনে। ডাক্তার প্রয়োজন মনে করলে ওষুধ পরিবর্তণ করেছেন। কিন্তু সাহস দিয়েছেন, আমরা ঠিক আছি। লক্ষণ প্রকাশের ৭ম থেকে ৯ম দিনগুলোকে বিশেষ খেয়াল রাখতে বলেছেন। কেননা ওই সময়েই নাকি শ্বাস-কষ্ট শুরু হয়। আমরা ভাগ্যবান ভেন্টিলেশন পর্যন্ত যেতে হয়নি।

৫. আমি ১২তম দিন থেকেই ভালো অনুভব করছিলাম। দূর্বলতা ছাড়া সব লক্ষণই সে সময় চলে যায়। কিন্তু তিন্নির কানের চারপাশজুড়ে ব্যথাটা যাচ্ছিল না। সেটা নির্মূল হতে লেগে যায় ১৮তম দিন পর্যন্ত। এরমধ্যে ঈদ আসে। অদ্ভূত এক ঈদ। বিষন্ন এবং অচেনা। নানা মানুষ খাবার পাঠায়। দুজনের অফিস থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার-সদায় আসে। তবু আনন্দ আসে না। এমন দমবন্ধ ঈদ আসেনি জীবনে। ২১তম দিনের মাধায় আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রথম ফলোআপ টেষ্ট করাই। ২ জুন রিপোর্ট পাই। দুজনই নেগেটিভ। যাক, মনের মধ্যে অদ্ভূত ভাললাগা কাজ করতে থাকে। অপেক্ষায় থাকি দ্বিতীয় ফলোআপের।

৬. বিএসএমএমইউ থেকে ৪ জুন আমাদের দ্বিতীয় ফলোআপের নমুনা সংগ্রহ করে। ৫ জুন রেজাল্ট পাই। সেখানে তিন্নি ফের নেগেটিভ হলেও আমার আসে পজিটিভ। মাত্র তিন দিনে আমার ফলটা উল্টে যাওয়া প্রসঙ্গে ভাইরোলজিস্টরা স্পষ্ট কোনো ব্যখ্যা দিতে পারেননি। তারা বলেছেন, এটা রেয়ার কেস। সংখ্যায় কম হলেও এমন কিছু কেস তারা পাচ্ছেন। কেউ বলেছেন রিঅ্যাক্টিভেশন, কেউ বলছেন মৃত আরএনএ। সে যাই হোক, একটা ‌'পজিটিভ' শব্দ সব কিছু ফের অন্ধকার করে দিল। কেটেও কাটল না দীর্ঘ বন্দীজীবন। শুরু হলো নতুন আরেক সংগ্রাম।

৭. আমার পেট খারাপ শুরু হয় ৪ জুন রাত থেকেই। তখন পাত্তা দেইনি। কিন্তু রিপোর্ট পুনরায় ‘পজিটিভ’ আসার পর বুঝতে পারি করোনার লক্ষণ রয়ে গেছে। ডাক্তারকে জানাই। তিনি ফের ‌এন্টিবায়োটিক শুরু করতে বলেন। এ এক অদ্ভূত যাত্রা। তিন্নি সুস্থ্য কিন্তু আমি পজিটিভ, ফলে ও নিজেও বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেল না। আইসোলেশনে থাকতে হলো। শঙ্কিত দিন যায়, অস্থিরতম রাত। ৬ জুন বিকেল থেকে আমার আর কোনো লক্ষণ না থাকায় ১০ জুন পুনরায় নমুনা সংগ্রহ করে বিএসএমএমইউ। ১১ জুন রিপোর্ট আসে। এবারও 'পজিটিভ'। আমি যেন করোনার দুষ্টুচক্রে পড়লাম। টেষ্টেও বিশ্বাস হয় না। ডাক্তার বলেন, পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ নিয়ে খানিক সন্দেহ থাকে, কিন্তু পর পর দুবার পজিটিভ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে আশার কথা, শরীরে কোনো লক্ষণ নেই। ফলে চিন্তারও নাকি কারণ নেই। ডেঞ্জার সময়টা পার করে ফেলেছি। করোনাকালীন পুরনো নিয়মগুলো মানার পাশাপাশি চিন্তামুক্ত থাকার পরামর্শ দেয় ডাক্তার। কিন্তু চিন্তা কি আর কাটে? সামান্য গ্যস্টিকের ব্যথাকেও শ্বাসকষ্ট ভেবে আতকে উঠি! করোনা এমনই এক মানসিক অত্যাচার।

৮. করোনাকালে মানসিক স্বাস্থ্য একটা জরুরি বিষয়। চারপাশে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে। আগে ভাবতাম চিনি না, এখন তো চেনাজানা মানুষের মৃত্যুর খবরও পাচ্ছি। ফলে নিজেকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে পারাটাই এ সময় বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ জয় করতে সহায়তা করেছে নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজন প্রাইম। ব্রেকিং ব্যাড, পিকি ব্লাইন্ডার্স, হাউজ অব কার্ডসের মতো সিরিজগুলোতে যথাক্রমে ওয়াল্টার-জেসির ম্যাথ ল্যাব, সিলিয়ান মারফির দুর্দান্ত অভিনয় এবং আন্ডারউড ফ্যামিলির রাজনৈতিক বুদ্ধির চক্রে পড়ে আমি ভুলেই যাই আমার প্রাণঘাতি অসুখ করেছে। এছাড়াও ইবাদত একটা বড় মেডিটেশন, যা মনকে শান্ত করে। বেছে বেছে কথা বলেছি, পরিবার ও অতি প্রিয় কিছু মানুষের সঙ্গে, যারা আমাকে উদ্বেলিত করেছে, চাঙ্গা রেখেছে। এছাড়াও কয়েকটা ভালো বই পড়ে শেষ করেছি। দুটো নতুন গল্প লিখেছি। একটা উপন্যাসের সার-সংক্ষেপ দাঁড় করিয়েছি। মোটকথা, এ সময়ে যা করতে ভালো লাগে, তা-ই করা ভালো। ফেসবুকে এক্টিভ অথচ কে আপনার খোঁজ নেয়নি, পৃথিবী কবে সুস্থ্য হবে, এসব ভেবে ভেবে অস্থির হওয়ার মানে নেই।

৯. নি:সন্দেহে ৩৯ দিন একটা লম্বা সময়। এতো লম্বা সময় গৃহবন্দী হয়ে থাকাটা কষ্টের। নি:শ্বাসের ব্যয়াম করেছি মাঝে মাঝে। বড় করে দম নিয়ে ১৫-২০ সেকেন্ড ভেতরে আটকে রেখে মুখ দিয়ে ছেড়েছি। ইয়োগা করার চেষ্টা করেছি। বুকে চাপ চাপ লাগলে উপুড় হয়ে শুয়ে থেকেছি। আর নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য খেয়েছি। ঘরের কাজ, ধোয়ামোছা, রান্না করা- এসবেও আনন্দ খুঁজেছি। পেয়েছিও। আমার জন্যে সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয় ছিল এই পুরো সময় তিন্নিকে পাশে পাওয়া। সুখে, দু:খে এবং অসুখেও এই সৌভাগ্য সবার হয় না।

১০. আমাদের দুজনেরই একসঙ্গে ডেঙ্গু হয়েছিল। সে কি ভয়াবহ যন্ত্রণা। এমন শারীরিক যন্ত্রণা আমাদের আর হয়নি কখনও । সুস্থ্য হওয়ার পরও একমাস মাথা তুলে দাঁড়াতে পারিনি। খুব দূর্বল লাগত। সেই তুলনায় করোনা অবশ্যই কম ভোগান্তির রোগ। বিশেষ করে যাদের হাসপাতাল অবধি যেতে হয়নি। কিন্তু এ কথা মানতেই হবে, করোনার মানসিক চাপ অসহনীয়। অসনীয় মানে তীব্রভাবে অসহনীয়। সবাই এই চাপ সামলাতে পারে না। দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সেবার যে অবস্থা, তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। প্রভাব ও যোগাযোগ থাকার পরও টেস্ট করাতে আমাদের কষ্ট হয়েছে, এমনকি রিপোর্ট পেতেও। ফলে যাদের সুযোগ আছে ঘরে থাকার, তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ঘরে থাকবেন নাকি এইসব দুর্বিসহ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বেন!

তবে করোনা যদি সত্যি সত্যি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এই সত্য মেনে নেওয়া ভালো যে, হাম কিংবা পক্সের মতো আপনারও জীবনে এক বা একাধিকবার করোনা হবে। এবং আপনি অবশ্যই জয় করে ফিরে আসবেন।

১১. করোনা ও ডেঙ্গু জয় করে বেঁচে গেছি এবং সুপার হিউম্যানে পরিণত হয়েছি ভেবে যখন আত্মসুখে ভুগছি ঠিক তখনই ডাক্তার বন্ধু কবি কুশল ইশতিয়াক জানাল যে, নতুন গবেষণায় দেখা গেছে করোনা জয় করে ফিরে আসা রোগিদের এন্টিবডি তৈরি হলেও তা দু মাসের বেশি থাকছে না এবং কোভিডের দীর্ঘমেয়াদী এন্টিবডি তৈরি হওয়া প্রায় অসম্ভব। পাশাপাশি রিইনফেকশনের প্রবল সম্ভাবনাও নাকি আছে। এমন বাস্তবতায় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার একমাত্র উপায় ওষুধ খুঁজে বের করা। যা এখনও সুদূর পরাহত। ফলে সুস্থ্য হওয়ার পরও সতর্কতার মাফ নেই।

শেষের আগে:
এই দীর্ঘ ৩৯ দিন যারা পাশে ছিলেন, যাদের প্রার্থনায়, শুভ কামনায় নিশিদিন ছিল আমাদের নাম, তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। সামান্য একজন লেখক-সাংবাদিক এবং তার চিত্রশিল্পী স্ত্রীর জন্য আপনাদের যে তুমুল ভালোবাসা ও মমতা, তা আমাদের প্রেরণা দিয়েছে, মুগ্ধ করেছে। এইসব মুগ্ধতা মিছে নয়।

করোনার রাতগুলিতে অসংখ্যবার মনে হয়েছে আর বুঝি ভোর হবে না। সকাল দেখবো না। কিন্তু ঠিকই ঘুম ভেঙ্গেছে। চোখ মেলে দেখেছি প্রিয়তমাকে। এই যে পাশাপাশি আছি, এই যে বেঁচে আছি, এর চেয়ে সৌভাগ্যের আর কি হতে পারে! এই বেঁচে থাকাটাকে এবার তাই অর্থবহ করে তুলতে হবে।

যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বা হবেন, যারা এইসব অস্থির সময়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন, তাদের জন্য বলব, দিনশেষে আপনার জন্যে কী অপেক্ষা করছে আপনি জানেন না। কেননা জীবন ক্ষণে ক্ষণে বাঁক বদলায়। খাদের কিনারে দাঁড়িয়েও শেষ মুহুর্তে ফেরার পথ খুঁজে পায় মানুষ, জীবন নেয় নতুন আরেক বাঁক।

এইতো জীবন, মায়াবী অদ্ভূত রহস্যে ঘেরা!

 

লেখক: আবদুল্লাহ আল ইমরান, কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

 

আরও পড়ুন:

“স্ত্রীর রিপোর্ট নেগেটিভ কিন্তু আপনার পজেটিভ”

"হ্যা, আমি এবং আমার স্ত্রী করোনা আক্রান্ত"

Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam

Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon

SHOKHOBOR24.COM

2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201

TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA

COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition