সন্ধান মিলেছে ১২০, ০০০ বছরের পুরোনো মানুষের পায়ের ছাপ, মরুভূমি নয় সবুজ ছিল আরব!

প্রকাশঃ ২০-০৯-১৭ ৮:১১:৩৮ পিএম
আপডেটঃ ২০২৪-১২-২১ ৮:৫২:৩০ পিএম
লেখকঃ সুখবর ডেস্ক
সন্ধান মিলেছে ১২০, ০০০ বছরের পুরোনো মানুষের পায়ের ছাপ, মরুভূমি নয় সবুজ ছিল আরব!
সন্ধান পাওয়া মানুষের পায়ের ছাপ (বামে), ছাপের ডিজিটাল ছবি (ডানে)

উত্তর সৌদি আরবের নেফুদ মরুভূমিতে ১২০, ০০০ বছর আগের মানুষের পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন গবেষকেরা। তারা বলছেন, মরুভূমিতে প্রাচীন পূর্বপুরুষদের ওই পায়ের ছাপ আরবের প্রাচীন ইতিহাস বিষয়ে নতুন তথ্যের খোঁজ দিতে পারে। 

 

গবেষকরা ধারণা করছেন, সেখানে এখনকার প্রজাতির উট, মহিষ বা হাতির তুলনায় বড় বড় প্রাণীর চারণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যেসব মানুষের পায়ের ছাপ মিলেছে, তারা বড় বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার করত। তবে তারা এক জায়গায় বেশি দিন থাকত না। তাদের দীর্ঘ যাত্রাপথের নির্দেশক হিসেবে পানির এসব গর্ত ব্যবহার করত।

 

তারা ওই দৃশ্য বিস্তারিতভাবে পুনর্গঠন করে দেখেছেন। গতকাল বুধবার ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ সাময়িকীতে এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রান্তে পূর্বপুরুষদের ছড়িয়ে পড়ার পথের নতুন তথ্য পাওয়া যাবে।

 

গত দশক থেকেই গবেষকেরা বলে আসছেন, সৌদি আরবের পরিস্থিতি সব সময় একরকম ছিল না। প্রাকৃতিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক সবুজ এবং আর্দ্র অবস্থায় ছিল। শেষ ইন্টারগ্লেসিয়াল যুগে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল।

 

গবেষণা নিবন্ধের সহলেখক রিচার্ড ক্লার্ক-উইলসন ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘যে মরুভূমি এখন আরব উপদ্বীপে বিস্তৃত, তা অতীতের একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্থায়ী মিষ্টি জলের হ্রদ এবং নদীসহ বিস্তৃত তৃণভূমিতে রূপ নিয়েছিল।’

 

জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল ইকোলজির গবেষক ম্যাথু স্টুয়ার্ট বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, তিনি যখন ২০১৭ সালের গবেষণার মাঠপর্যায়ে কাজ করছিলেন, তখন ওই পায়ের ছাপের খোঁজ পান। আলাথার নামের প্রাচীন এক হ্রদে ওই ছাপ পাওয়া যায়। 

 

পদচিহ্নগুলো জীবাশ্ম প্রমাণের একটি অনন্য রূপ, যা সঠিক সময়ের তথ্য দিতে পারে। পায়ের ছাপ যে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারে, তা অন্য কোনো রেকর্ডে পাওয়া যায় না।

 

আবিষ্কার করা শত শত ছাপের মধ্যে সাতটি হোমিনিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যার মধ্যে চারটির ক্ষেত্রে অনুরূপ, একে অপরের থেকে দূরত্ব এবং আকারের পার্থক্য দেখা যায়। এ থেকে বোঝা যায়, দুই বা তিনজন একত্রে ভ্রমণ করেছিল।

 

গবেষকেরা বলেন, তারা যে পায়ের ছাপ পেয়েছেন, তা অপেক্ষাকৃত আধুনিক মানুষের। কারণ নিয়ানডারথলদের চেয়ে এর পার্থক্য রয়েছে। ওই সময়ে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে নিয়ানডারথলদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

 

গবেষক স্টুয়ার্ট বলেন, ‘আমরা জানি, ওই হ্রদে মানুষের পাশাপাশি প্রাণীরা আসত। অঞ্চলটিতে কোনো পাথরের সরঞ্জাম মেলেনি। অর্থাৎ, পশুদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখত তারা।

 

মানুষের পায়ের ছাপের সঙ্গে ২৩৩ জীবাশ্ম উদ্ধার করেছেন গবেষকেরা। এ থেকে বোঝা যায়, এখানকার তৃণভোজীরা মাংসাশী প্রাণীর শিকার হয়েছিল।

 

গবেষক স্টুয়ার্ট বলেন, আগে ধারণা করা হতো ,আদি যুগে মানুষ দক্ষিণ গ্রিস এবং লেভান্ট হয়ে ইউরেশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা উপকূল কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ পথ, হ্রদ এবং নদী অনুসরণ করে তাদের ছড়িয়ে পড়ার দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ। আফ্রিকা ও ইউরোশিয়ার মধ্যে চলাচলকারী মানুষের জন্য উত্তর আরবের খোলা তৃণভূমি, পানির উৎস এবং হাতির মতো প্রাণীর উপস্থিতি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছিল।

Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam

Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon

SHOKHOBOR24.COM

2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201

TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA

COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition