কেন খাবেন পাকা কলা

প্রকাশঃ ২০-১০-২৯ ১১:১৬:৪২ পিএম
আপডেটঃ ২০২৪-১২-২১ ১২:২২:২৯ পিএম
লেখকঃ সুখবর ডেস্ক
কেন খাবেন পাকা কলা

কলাকে ক্যান্ডির প্রাকৃতিক সংস্করণ বলা যেতে পারে। পাকা কলা এতটাই মিষ্টি যে এটা প্রক্রিয়াজাত মিষ্টান্ন খাবারের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। কলাতে কেবল প্রাকৃতিক চিনিই নয়, অনেক ভিটামিন ও মিনারেলও রয়েছে। তাই স্বাস্থ্যোন্নয়নে স্বাস্থ্যকর ডায়েটে কলাকে স্থান দিতে পারেন। এখানে কলার কিছু উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

* যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি মাঝারি আকারের কলাতে ৪২২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার প্রায় ১২ শতাংশ। শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে প্রচুর পটাশিয়াম প্রয়োজন। এটি মাংসপেশি সংকোচন, স্নায়ু সংকেত প্রেরণ, কোষে পুষ্টি সরবরাহ, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ ও শরীরে লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শরীর পর্যাপ্ত পটাশিয়াম না পেলে উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি পাথরের ঝুঁকি বেড়ে যায়, ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভূত হয় এবং মাংসপেশিতে টান পড়ে বা ব্যথা হয়। পটাশিয়ামের আরো কিছু সমৃদ্ধ উৎস হলো- মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, পালংশাক, ব্ল্যাক বিনস, বিট, তরমুজ ও দই।


* কলা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে। কলার পটাশিয়াম শরীরে তরলের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে ব্যায়ামের পর শরীর যেসব ইলেক্ট্রোলাইট হারায়, যেমন- সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। শরীরে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব স্পোর্টস নিউট্রিশন খেলোয়াড়দেরকে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছে।

* কলা অন্ত্রের জন্য উপকারী। একটি মাঝারি আকারের কলাতে ৩ গ্রাম ফাইবার পাবেন, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার প্রায় ১০ শতাংশ। কলার প্রিবায়োটিক (এক প্রকারের ফার্মেন্টেবল ফাইবার) অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে সাহায্য করে। এসব সহায়ক ব্যাকটেরিয়া হজম বাড়ায়, ঠান্ডার স্থায়িত্ব কমায় ও ওজন কমাতে সহযোগিতা করে।

* ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের পূর্বে খাওয়ার জন্য সেসব খাবারই সেরা যেখানে শক্তির জন্য প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে, কিন্তু পাকস্থলিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। তেমন একটি আদর্শ খাবার হলো কলা। ব্যায়ামের আগে খাওয়ার জন্য জিম ব্যাগে কলা নিয়ে যেতে পারেন। কলার মতো প্রাকৃতিক চিনিতে সমৃদ্ধ খাবার খেলে ব্যায়াম বা কঠোর পরিশ্রমের সময় সহজে ক্লান্ত হবেন না। এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, কলার একটি অনন্য উপাদান অ্যাথলেটিক পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করে।

* ব্যায়ামের পরেও কলা খাওয়ার গুরুত্ব রয়েছে। প্রচুর পরিশ্রম বা ব্যায়ামের পর ক্লান্তি দূর করতে কলা খেতে পারেন। পিএলওএস ওয়ানে ২০১৮ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, কলার কিছু উপাদান ব্যায়াম প্ররোচিত প্রদাহ কমাতে পারে। এই প্রদাহ হলো ব্যায়ামের পর পেশি ব্যথার কারণ। তাই ব্যায়ামের পর পেশিকে স্বস্তি দিতে কলা খেয়ে নিন।

* হার্টের সুরক্ষায়ও কলাকে সহায়ক খাবার বলা যেতে পারে। হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কলার পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা বলছে, পর্যাপ্ত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্তচাপ কমে ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। পটাশিয়াম শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বাড়তি সোডিয়াম বের করে দেয়। হার্টের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী সোডিয়াম বেরিয়ে যায় বলে অঙ্গটিতে ড্যামেজের ঝুঁকি কমে।

* কলাতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন বি৬ রয়েছে। ভিটামিন বি৬ প্রায়সময় স্পটলাইটে না থাকলেও অন্তত একটি কারণে এই পুষ্টির বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কলাতে দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার এক-তৃতীয়াংশ ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায়, যা গর্ভস্থ বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশসাধনের জন্য দরকারি। ভিটামিন বি৬ বিপাকের সঙ্গে সম্পৃক্ত এনজাইম রিয়্যাকশনেও সহায়তা করে।
 
* কলা ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ব্যালেন্সড-ডায়েটের অংশ হিসেবে কলা খেলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। কলাতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ নামক ফাইবার থাকে, যা কম ক্যালরি খেতে ও ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকারের কলাতে মাত্র ১০০ ক্যালরি থাকে। কলার ফাইবার পেটভরা অনুভূতি দিয়ে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়। ওজন কমাতে চাইলে আপনার ডায়েটে কলা সংযোজন করতে পারেন।

* কলা কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারে। প্রতিদিন একটি কলা খেলে কিডনির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে। ৬১,০০০ সুইডিশ নারীর ওপর পরিচালিত গবেষণায় যারা মাসে ৭৫টি (দিনে ২/৩টি) কলা খেয়েছেন তাদের রেনাল সেল কার্সিনোমা (কিডনির ক্যানসার) ডেভেলপের ঝুঁকি কম ছিল। কলার উচ্চ ঘনত্বের ফেনলিকস ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। ৯০,০০০ নারীর ওপর পরিচালিত আরেকটি বড় গবেষণায় যেসব নারী প্রতিদিন ৪,০৯৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম খেয়েছেন তাদের কিডনি পাথরের ঝুঁকি সেসব নারীদের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কম ছিল যারা প্রতিদিন ২,৪০৭ মিলিগ্রামের চেয়ে কম পটাশিয়াম খেয়েছেন। এর কারণ হলো, পটাশিয়াম শরীর থেকে বাড়তি ক্যালসিয়াম বের করে দেয়। ক্যালসিয়াম হলো কিডনি পাথরের অন্যতম বিল্ডিং ব্লক।

Chairman Of The Board: Syed Shamsul Alam

Editor in Chief: Tahsen Rashed Shaon

SHOKHOBOR24.COM

2994 DANFORTH AVE. | SUITE# 201

TORONTO. ON. M4C 1M7. CANADA

COPYRIGHT © 2019. ALL RIGHTS RESERVED. BY Shukhobor24.com About Us Privecy & Policy Terms & Condition