কবিতাঃ আমাকে চেনো না

By: মাসুদ পথিক ২০২০-০৮-১৪ ১:৫৮:০২ পিএম আপডেট: ২০২৪-০৪-২৪ ৫:০৯:৩২ এএম সাহিত্য
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

অতএব অনাহুত কেউ, কিংবা
নব জাতকের কোমল ফনেটিক্স থেকে এইযে প্রশ্নচিহ্নগুলি
তাদেরকে বলছি, তোমরা আমাকে চেনো না?
আমাকে চেনো না!
আমি-তো পৃথিবীর প্রথম ধান চাষ করা সেই কৃষাণীর গানগুলি

 

তথাপি আমি ডেমোগ্রাফি জুড়ে মুক্তির নৃ বংশ পদবী,
এবং

 

ক্লান্ত কৃষকের পীঠে লেপটে থাকা ঘাম ফুলের মতো ফোটে উঠি রুদ্রের পরাগায়নে
আর বাতাসে বাতাসে হই শান্ত;মোহন বাঁশির সুরে মিলিয়ে যাই
আমি শ্রমিকের বাহুতে উত্তুঙ্গ রক্তের প্রবাহমানতা

 

সকল রিচুয়াল আর জিও-কালচারের পরম্পরা
প্রজননে শোভাময় এই ব-দ্বীপ ভূমি 
আমিই জনজাতির অপরাপর ডিসকোর্স
এবং সকল কোলোকোয়েল সিম্ফনি

 

এসবই দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে অনন্তের আকাশ
মাঠে মাঠে চির শস্য শ্যামলীমা

 

আমাকে চেনো না! আমি-তো সাত হাজার বছর ধরে
হেঁটে চলেছি এই রাঢ় সমতটে
আমি সেই জলধিও, ষোড়শ জনপদে বয়ে চলেছি দিবারাত্রি, আজও

 

আমাকে চিনো না! আমি -তো বেদনার অগ্রজ
আমি কঙ্কাবতীর ডালিম কুমার
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জান চন্দ্রাবতীর গাঁথা
আর একাগ্র বেহুলার ব্যথিত ভাসান
আমিও-তো পাড়ি দিয়েছি সাত সমুদ্র তের নদী

 

আমি নই কি লাজুক বধুর নাকের নোলক
আর রাত জাগা জোনাকিও!

 

আমি সেই রাখালের খড়ের বেণীতে জ্বলজ্বল আগুন
হুকোর ভেতর তীব্র গুড়গুড় স্বজাতীয় নেশার চমক

 

আমি কি নই বর্ণমালার ভেতর জেগে উঠা মায়াবী ধ্বনি!
ইতিহাসের বুকে এক দীর্ঘ বাক্যের সরণী
আর গ্রন্থভরা মিথোলজির অপার পরিধি

 

আমাকে চেনো না! আমি ভাষার সমুজ্জ্বল গতিবিধি
পথে পথে হেঁটে হেঁটে চলেছি লিখে হাজারো গল্পকাহিনি

 

আমাকে চেনো না! আমি তো বরীন্দ্র জাদুঘরে জাজ্বল্য স্থাপত্য
ওয়ারি বটেশ্বরে লুকায়িত সিনিক সভ্যতার শেষ মানব
আমি জাতিস্বর
স্তুতিহীন দিবসের শেষে শোনা হলো যে জাতির ইতিহাস
আমি তার শেষ প্রতিনিধি

 

আমি সেই পিতা--
আমি সেই জনক--
যাঁর স্থিতি আর পরিধিতে লেখা হলো একটাই অক্ষর ‘বাঙালি’

 

আমাকে চেনো না? আমি ফোক কাস্টম থেকে জন্ম নেয়া প্রাচ্য জন
আমাকে চেনো না! আমি তোমাদের চেতনার প্রিয় স্বজন; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

 

 

মাসুদ পথিক- কবি, নির্মাতা, সংগঠক।