মানবতার জন্যে আঁকা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চিত্রকর্ম, দাম উঠতে পারে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

By: সুখবর ডেস্ক ২০২০-০৮-২০ ৯:৫৫:৩৯ এএম আপডেট: ২০২৪-০৪-১৯ ২:০৯:২১ পিএম শিল্প
চিত্রকর্মটির সামনে চিত্রশিল্পী সাচা জাফ্রি। ছবি: সিএনএন

দুবাইয়ের একটি বিলাসবহুল আবাসিক হোটেলের বলরুমে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পেইন্টিংটি আঁকা হচ্ছে। এটি আঁকছেন ব্রিটিশ চিত্রশিল্পী সাচা জাফ্রি।

 

তিনি আশা করছেন, আগামি মাসে শেষ হবে ২১ হাজার বর্গফুটেরও বড় শিল্পকর্মটির কাজ। এরপর তা কয়েকটি প্যানেলে বিভক্ত করা হবে।

 

ধারণা করা হচ্ছে, নিলামে এটির দাম উঠবে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

‘দ্য জার্নি অব হিউম্যানিটি’ শিরোনামের চিত্রকর্মটি আকারে চারটি রেগুলার সাইজ বাস্কেটবল কোর্টের সমান। দুবাইয়ের অ্যাটলান্টিস দ্য পাম হোটেলে এটি আঁকা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর লকডাউন জারি করা হলে পাঁচ মাসেরও বেশিকাল ধরে ওই হোটেলেই রয়েছেন জাফ্রি।

 

‘দুবাইয়ে আটকা পড়ে আমি এমন দারুণ কিছু একটা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম, যা অর্থবহ হবে,’ হোটেল থেকে এক ভিডিওকলে বলেন তিনি।


‘এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম, যেটি সত্যিকার অর্থেই বড় ধরনের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা জাগাবে।’ বলেন তিনি।

 

নিজস্ব বিমূর্ত স্টাইলে ব্রাশওয়ার্ক ও ড্রিপ-পেইন্টিং করতে পছন্দ করেন জাফ্রি। এ স্টাইলকে তিনি ‘জাদুবাস্তববাদ’ বলে ডাকেন। তার এই কাজও ওই ঘরানার। এর মূল থিম, বৈশ্বিক মহামারির কালে মানুষের মধ্যে সংযোগ, বিচ্ছেদ ও সংঘরোধ। 

 

চার ভাগে, ২৪ সপ্তাহ সময় লাগবে পেইন্টিংটি শেষ করতে, এই হিসেব কষেই কাজ এগিয়েছেন জাফ্রি। প্রথম ভাগটি ‘পৃথিবীর আত্মা’র প্রতিনিধি, বলেন তিনি। বাকিগুলো প্রতিনিধিত্ব করছে প্রকৃতি, মানবতা ও বৃহত্তর মহাবিশ্বের।

 

আঁকা শেষ হলে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হবে এই পেইন্টিং। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু দালান, বুর্জ খলিফার দেয়ালে ঝুলিয়ে প্রদর্শন হবে এটির। এরপর এটিকে কম-বেশি ৬০ টুকরা করা হবে; প্রতি খণ্ডে প্রায় ৩০ বর্গমিটারের মতো। তারপর আগামি ডিসেম্বরে দুবাইয়ে এক নিলামে আলাদা আলাদা টুকরো হিসেবে পেইন্টিংটি তোলা হবে।

 

‘আমরা আশা করছি, এর দাম ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত উঠবে। আর সেই টাকা পৃথিবীর নানা প্রান্তের গরিব শিশুদের শিক্ষা, সংযোগ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনের কাজে ব্যবহার করতে পারব,’ বলেন জাফ্রি।

 

তিনি আরও বলেন, ‘যারা একেকটি টুকরো কিনবেন, তারা শুধু দুনিয়ার সবচেয়ে বড় পেইন্টিংয়ের অংশীদারই হবেন না, বরং ইতিহাসেরও একটা অংশ হবেন। কেননা, ওই টাকা দিয়ে আমরা বড় ধরনের কাজ করব।’

 

‘একেকটি ভাগের জন্য ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে রাজি, এমন বড় শিল্পসংগ্রাহক, বিনিয়োগকারী ও সমাজসেবীর অভাব হবে বলে মনে হয় না।’

 

এই প্রকল্প ‘হিউম্যানিটি ইন্সপায়ার্ড’-এর অন্তর্ভুক্ত, যেটি শিশুদের নিয়ে কাজ করা ইউনিসেফ ও ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার সঙ্গে সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করে।

 

ব্যক্তিজীবনে ৪৩ বছর বয়সী জাফ্রি এটনের অভিজাত ব্রিটিশ আবাসিক স্কুলে ডিউক অব ক্যামব্রিজ- প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। তিনি জানান, এভা লঙ্গোরিয়া ও রিটা ওরা-সহ বিশ্বের শতাধিক উচ্চমার্গীয় ব্যক্তিত্ব এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত।

 

 

সূত্র: সিএনএন